—ফাইল চিত্র।
পুরাতন মালদহের বিডিও-র পরে এ বার করোনা আক্রান্ত হলেন পুরাতন মালদহ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি-সহ ব্লক প্রশাসনের একাধিক কর্মী। সভাপতির স্বামীও আক্রান্ত হয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার মালদহে নতুন যে ২৮ জনের লালারসের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে, তাঁদের মধ্যে পুরাতন মালদহের বিডিও-র স্ত্রী ও দুই ভাই রয়েছেন।
এ দিকে, লালারসের রিপোর্ট দেরি করে আসার অভিযোগ তুলে স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন করোনা-আক্রান্ত পুরাতন মালদহ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। তিনি বলেন, ‘‘বিডিও আক্রান্ত হওয়ার পরে ২৬ জুন আধিকারিক-কর্মী-পদাধিকারী-জনপ্রতিনিধি ও যাঁরা সে দিন অফিসে এসেছিলেন সব মিলিয়ে ৮২ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই রিপোর্ট একসঙ্গে না দিয়ে ভাগ ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে।’’ তাঁর অভিযোগ, রিপোর্ট দেরি করে আসায় অনেক কর্মী ও জনপ্রতিনিধি ভেবেছিলেন যে তাঁদের রিপোর্ট নেগেটিভ রয়েছে। তাঁরা তা-ই দফতরে এসেছিলেন বা বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। কিন্তু পালা করে রিপোর্ট দেওয়ায় দেখা যাচ্ছে যে অফিসের অনেকেই পরপর আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে।
যদিও বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা মুখ খুলতে চাননি। তাঁরা জানিয়েছেন বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতির একাধিক পদাধিকারী ও কর্মী আক্রান্ত হওয়ায় সরকারি পরিষেবা কী ভাবে মিলবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরাতন মালদহ বিডিও অফিসের কাজকর্ম সচল রাখতে জেলা প্রশাসন থেকে শিরিং ভুটিয়া নামে একজন আধিকারিককে ওই ব্লকের বিডিও-র দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি যুগ্ম বিডিও রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়া নিয়ে এ দিন বিডিও অফিসে গিয়ে কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন সদর মহকুমাশাসক সুরেশচন্দ্র রানো।
মালদহ জেলায় করোনা সংক্রমণ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। বুধবার রাতে জেলার ২৮ জনের লালারসের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। ফলে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা হল ৬৭৬। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, নতুন আক্রান্তদের মধ্যে পুরাতন মালদহ ব্লকের ১৩ জন, ইংরেজবাজার শহরের ১০ জন, এক জন করে রতুয়া ২, কালিয়াচক ১ ও কালিয়াচক ৩ ব্লকের। দু’জন রোগীর খোঁজ পাওয়া যায়নি।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরাতন মালদহ ব্লকের বিডিও অফিস ও পঞ্চায়েত সমিতি দফতরের একাধিক কর্মী ও পদাধিকারী আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি পুরাতন মালদহের নারায়ণপুরে বিএসএফের ৪৪ নম্বর ব্যাটালিয়নের তিন জওয়ানও আক্রান্ত হয়েছেন। ইংরেজবাজার শহরের আক্রান্তদের বাড়ি ৩, ৫, ১০, ১৪, ১৯, ২৫ ২৬ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে। তার মধ্যে ১৪ এবং ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন করে আক্রান্ত রয়েছেন। শহরে আক্রান্তদের মধ্যে এক জন ব্যবসায়ীও রয়েছেন।
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘জেলায় এখনও পর্যন্ত ৩৭৮ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।’’