মহা-টান ভাঁড়ারে

তাদের হিসেব অনুসারে, গত ছ’মাসে বিস্কুট, জ্যাম, জেলি, চিপস এমনকি চিঁড়ে-মুড়ির বিক্রিও উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কমেছে উৎপাদনও। যে হারে বিক্রি কমছে তাতে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন সংগঠনের কর্তারা। এমন চললে আগামী এক বছরের মধ্যেই উত্তরবঙ্গে বহু কারখানা বন্ধ হয়ে যাতে পারে বলেই আশঙ্কা তাদের।

Advertisement

শুভঙ্কর চক্রবর্তী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৫:১৭
Share:

অপেক্ষা: পসরা সাজিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায়। শিলিগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র

বাঙালি গৃহস্থের বাড়ি মানেই কৌটো ভরা মুড়ি, চিঁড়ে, বিস্কুট। ঘুরতে গেলে ব্যাগে চিপস এবং বোতলজাত পানীয় জল। এই ভাঁড়ারেই এ বারে টান দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ বণিকদের সংগঠন নর্থবেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিজ় অ্যাসোসিয়েশনের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, গত ছ’মাসে প্রতিটি এমন জিনিসের বিক্রি কমেছে। কোনও ৫ শতাংশ তো কোনওটি ৩৫ শতাংশ। সংগঠনের সমীক্ষকরা বলছেন, ক্রয় ক্ষমতা কমে যাওয়াতেই খাদ্য সামগ্রি কেনাতে রাশ টানতে শুরু করেছে সকলে। তাদের হিসেব অনুসারে, গত ছ’মাসে বিস্কুট, জ্যাম, জেলি, চিপস এমনকি চিঁড়ে-মুড়ির বিক্রিও উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কমেছে উৎপাদনও। যে হারে বিক্রি কমছে তাতে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন সংগঠনের কর্তারা। এমন চললে আগামী এক বছরের মধ্যেই উত্তরবঙ্গে বহু কারখানা বন্ধ হয়ে যাতে পারে বলেই আশঙ্কা তাদের।

Advertisement

দামি পোশাক, শাড়ি, জুতো, প্রসাধনী বিক্রি যে কমছে, সেই তথ্য ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে। এখন হাতে টাকা না থাকায় খাবার কিনতেও কৃপণ হচ্ছেন উত্তরবঙ্গের বাসিন্দারা। শিলিগুড়ির একটি বিস্কুট কারখানার ম্যানেজার বলেন, ‘‘বিক্রি যে ভাবে কমছে, তা অত্যন্ত চিন্তার। বাজার সমীক্ষার পর বুঝতে পারছি, রকমারি বিস্কুট কেনায় এখন আগের মতো আগ্রহ দেখাচ্ছেন না বড় অংশের ক্রেতা।’’ একটি জ্যাম তৈরির কারখানার মালিক বলেন, ‘‘আগে যিনি মাসে ২০০ গ্রাম জ্যাম কিনতেন, এখন তিনি ১০০ গ্রাম কিনছেন। কম দামের কথা ভেবে গুণগত মান যাচাই করা নিয়েও ক্রেতাদের একটা অংশ আগের মতো আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।’’ একটি চিপস প্রস্তুতকারক সংস্থার ম্যানেজার জানান, নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের মানুষরাই তাঁদের প্রধান ক্রেতা। তাঁরা এখন যেটুকু না কিনলেই নয়, সেটুকুই কিনছেন।

প্যাকেটজাত জল বিক্রি করেন এমন একটি সংস্থার পক্ষ থেকে উত্তরবঙ্গের বাজারে সমীক্ষা করা হয়। তার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘জল কিনে খাওয়ার প্রবণতা শেষ দু’মাসে অনেকটাই কমেছে। আগে যারা দোকান থেকে বোতলবন্দি জল কিনে খেত, তাদের একটা বড় অংশই বাড়ি থেকে জল নিয়ে বের হচ্ছে। অনেকেই খরচ কমাতে বাড়িতে জল পরিশোধন যন্ত্র বসিয়ে নিচ্ছেন।’’

Advertisement

নর্থবেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুরজিৎ পাল বলেন, ‘‘ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতা না বাড়লে কোনও দাওয়াই দিয়েই লাভ হবে না। কেন্দ্র দ্রুত পদক্ষেপ না করলে কারখানা ও বাজারগুলি অবস্থা আরও খারাপ হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন