মেয়ে খুন হয়েছে: বাবা

সঙ্ঘমিত্রাদেবীর  বাবা সাধন ধর বলেন, ‘‘ওই পরিবারের তরফে নানাভাবে অত্যাচার করা হত আমার মেয়েকে। তাপসের ভগ্নিপতি পরিকল্পনা করে ওদের সেবকে ঘুরতে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানেই জামাইয়ের ভগ্নিপতি মধুসূদন দাস তাদের মদ খাইয়ে দুর্ঘটনার দিকে ঠেলে দিয়েছিল।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৩৩
Share:

শোকাস্তব্ধ: সঙ্ঘমিত্রার বাবা। নিজস্ব চিত্র

সেবকের দুর্ঘটনায় মৃতা সঙ্ঘমিত্রা ধর দাসের বাপের বাড়ি থেকে এ বার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তোলা হল। পরিবারের সকলেই মদ খেয়ে সেবকে বেড়াতে গিয়েছিল বলে অভিযোগ তাঁদের। সেখানে গিয়ে প্রতিহিংসাবশত তাপসের গাড়িতে তাঁদের পরিবারের লোকজনই ধাক্কা মারে অভিযোগ। যদিও তাপসবাবুর পরিবারের তরফে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

Advertisement

সঙ্ঘমিত্রাদেবীর বাবা সাধন ধর বলেন, ‘‘ওই পরিবারের তরফে নানাভাবে অত্যাচার করা হত আমার মেয়েকে। তাপসের ভগ্নিপতি পরিকল্পনা করে ওদের সেবকে ঘুরতে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানেই জামাইয়ের ভগ্নিপতি মধুসূদন দাস তাদের মদ খাইয়ে দুর্ঘটনার দিকে ঠেলে দিয়েছিল।’’ সঙ্ঘমিত্রাকেও মদ খাওয়ানো হয় বলে বাপের বাড়ি থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে। তাঁর মাথায় হেলমেট দেওয়া হয়নি। একটি বেবি ব্যাগে ছোট মেয়েটি ছিল।

যদিও সঙ্ঘমিত্রার পরিবারের সব অভিযোগ খারিজ করেছে তাপসবাবুর পরিবার। তাপসবাবুর ভাই পঙ্কজবাবু বলেন, ‘‘শোকে বিহ্বল হয়ে ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে যা ইচ্ছে তাই অভিযোগ তোলা হচ্ছে। তারা মেয়েকে হারিয়েছেন। আমরাও দু’টি বাচ্চাকে হারিয়েছি। সেবকে গিয়ে কেউ মদ খায়নি। কেউ কাউকে ট্রাকের দিকে ধাক্কাও দেয়নি। কেবলমাত্র আমাদের পরিবারকে হেনস্থা করতেই এই অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’ পঙ্কজবাবুর দাবি, মধুসূদনবাবুরা ঘটনাস্থল থেকে খানিকটা সামনের দিকে ছিলেন বাইকে।

Advertisement

১৮ নভেম্বর দক্ষিণ ভারতনগর এলাকার দেবাশিস কলোনির বাসিন্দা তাপস দাসের বাইকে তাঁর স্ত্রী সঙ্ঘমিত্রা এবং বড় মেয়ে প্রিয়স্মিতা এবং ছোট মেয়ে ঋতিকা ফেরার সময় একটি ট্রাক তাদের পিছন থেকে জোরে ধাক্কা মারে বলে অভিযোগ। সঙ্গে তাপসবাবুর ভাই পঙ্কজবাবু এবং তাঁর স্ত্রী পূজাদেবী এবং তাঁদের ভগ্নিপতি মধুসূদনবাবু এবং তাঁর স্ত্রী শিখাও সঙ্গে গিয়েছিলেন।

সঙ্ঘমিত্রার পরিবারের তরফে ষড়যন্ত্রের কারণ হিসেবে দাবি করা হয়েছে, তাপসবাবু ইসলামপুরে কর্মরত ছিলেন। তিনি স্ত্রী এবং বাচ্চাদের নিয়ে যেতে চাইছিলেন। কিন্তু সঙ্ঘমিত্রার আপত্তি ছিল। তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা সঙ্ঘমিত্রার প্রতি প্রতিহিংসামূলক আচরণ করতেই এই দুর্ঘটনায় ঘটিয়েছে বলে দাবি মৃতার বাবা ও মায়ের। সাধনবাবুর আরও দাবি, দুর্ঘটনার পরে বাকিরা শুধু তাপসকে সঙ্গে করে নিয়ে চলে আসেন। পরে পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পাঠায়।

যদিও দার্জিলিং জেলা পুলিশের সূত্র জানানো হয়েছে, মহিলার শরীরে মদের কোনও ইঙ্গিত প্রাথমিকভাবে পাওয়া যায়নি। দ্বিতীয়ত, মহিলা ছোট মেয়েকে হাত দিয়ে আকঁড়ে ছিলেন। কোনও বেবি ব্যাগ উদ্ধার হয়নি এলাকা থেকে। ট্রাকটি তাকে বেশ খানিকটা ছেঁচড়ে নিয়ে চলে গেলে তার শরীরের নিচের অংশ নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। তবে ওই অবস্থাতেও তিনি বাচ্চাকে ছাড়েননি। পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, বাইকে চারজন আরোহীর মধ্যে কাউকে ওরকম হিসেব কষে ট্রাকের তলায় ফেলা সম্ভব নয়। বরাত জোরে বেঁচে গিয়ে থাকতে পারেন তাপস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন