ধর্ষণের নালিশ করার পরে দেহ মিলল ছাত্রীর

রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ বাড়ির কাছে একটি বাগানে মেয়েকে বিধ্বস্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন। পরের দিন সকালে রেজাউলের বিরুদ্ধে মোথাবাড়ি থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন ওই ছাত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৭ ০৩:১০
Share:

পাঁচ দিন আগেই প্রতিবেশী যুবকের বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন নবম শ্রেণির এক ছাত্রী। মঙ্গলবার সকালে সেই ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়ালো কালিয়াচক ২ ব্লকের রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের তুত্তিপাড়া গ্রামে।

Advertisement

ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, ধর্ষণের মামলা তুলে নেওয়ার জন্য অভিযুক্তদের পরিবারের তরফে লাগাতার চাপ ও হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। এ দিন সকালে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগ নিয়ে ধর্ষণে অভিযুক্ত যুবক ও তাঁর পরিবারের লোকজন বাড়িতে ঢুকে মেয়েটিকে শ্বাসরোধ করে খুন করে ঝুলিয়ে দেয়। ওই ছাত্রীর পরিবারের তরফে এ দিন মোথাবাড়ি থানাতেও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তরা পলাতক। প্রাথমিক তদন্তে অবশ্য পুলিশের অনুমান, মেয়েটি আত্মহত্যা করে থাকতে পারে। পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত চলছে।’’

স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই ছাত্রীর বাবা পেশায় দিনমজুর। তাঁর তিন মেয়ে। তিনি জানান, ২২ তারিখ রাতে প্রতিবেশী যুবক রেজাউল শেখ তাঁর মেযেকে ডেকে নিয়ে যায়। দীর্ঘক্ষণ ঘরে না ফেরায় খোঁজাখুজি শুরু করেন তাঁরা।

Advertisement

রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ বাড়ির কাছে একটি বাগানে মেয়েকে বিধ্বস্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন। পরের দিন সকালে রেজাউলের বিরুদ্ধে মোথাবাড়ি থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন ওই ছাত্রী। তাঁর অভিযোগ ছিল, ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে জোর করে তাকে ধর্ষণ করে রেজাউল। এবং বিষয়টি কাউকে জানালে প্রাণে মারারও হুমকি দেয়।

তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ দায়ের হলেও পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারেনি। বরং মামলা তুলে নিতে অভিযুক্তদের পরিবারের তরফ থেকে ক্রমাগত চাপ ও হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। পুলিশকে এ সব জানিয়েও কোনও ফল হয়নি।’’

ছাত্রীর এক কাকা জানান, এ দিন সকাল আটটা নাগাদ ছাত্রীর বাবা, মা ও বোনেরা কেউই বাড়ি ছিলেন না এবং সেই সুযোগে ধর্ষণ কাণ্ডে অভিযুক্ত রেজাউল ও তাঁর পরিবারের লোকজন এসে ছাত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করে। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তদের পরিবারের সবাই বাড়িছাড়া। বাড়িও তালাবন্ধ। ফলে কারও সঙ্গে কথা বলা যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা পলাতক, তাঁদের খোঁজ চলছে।

এ দিন ঘটনার খবর পেয়ে সকালেই ছাত্রীর বাড়িতে যান তৃণমূলের মোথাবাড়ি বিধানসভা কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘‘মেয়েটির মৃত্যু রহস্যজনক. পুলিশ ঘটনার তদন্ত করুক।’’ স্থানীয় জেলা পরিষদের সদস্য আসাদুল আহমেদের অভিযোগ, মেয়েটিকে সম্ভবত খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

মোথাবাড়ি থানার পুলিশ জানিয়েছে, ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়ার পরেই মামলা রুজু করা হয়েছিল। অভিযুক্তকে ধরতে পুলিশ রোজই বাড়িতে গিয়েছে। কিন্তু রেজাউলকে পাওয়া যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, তার খোঁজ চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন