পথ অবরোধে তৃণমূল কর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র।
দ্বন্দ্ব থামছেই না দিনহাটায়। এ বার তৃণমূলের পার্টি অফিসে বোমাবাজির অভিযোগ ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল দিনহাটার ওকরাবাড়িতে।
বেশ কিছুদিন থেকেই দিনহাটার বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূল বনাম যুব তৃণমূলের গোলমালের অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাতেও দিনহাটায় এক যুব কর্মীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। ঘটনায় নাম জড়ায় দলের দিনহাটা ২ ব্লক সভাপতি মীর হুমায়ুন কবীরের। শুক্রবার রাতে ওকরাবাড়ির ওই ঘটনাও গোষ্ঠী কোন্দলের জের বলে অভিযোগ উঠেছে।
দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ ওই অফিস বন্ধ করে বাড়িতে যান কর্মীরা। দরজা ভেঙে দুষ্কৃতীরা ভিতরে ঢুকে বোমা ফাটায় বলে অভিযোগ। ওই শব্দ শুনে এলাকার লোকজন ছুটে আসার আগেই দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রীর ছবি-সহ বেশ কিছু জিনিসেরও ক্ষতি হয়েছে। প্রতিবাদে শনিবার সকাল দশটা থেকে প্রায় দু’ঘণ্টা দিনহাটা-গীতালদহ রুটে অবরোধ করেন তৃণমূলকর্মীরা। পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে।
দিনহাটা ১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি নূর আলম হোসেন বলেন, “পুলিশে ওই ব্যাপারে অভিযোগ জানানো হয়েছে। কিছু বামপন্থী লোক দলে এসে যুব তৃণমূলের নাম ভাঙিয়ে এলাকায় অশান্তি করছে। গোটা বিষয়টি জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বকে জানান হয়েছে।” যুব তৃণমূলের দিনহাটা ১ ব্লক আহ্বায়ক নারায়ণ শর্মা পাল্টা বলেন, “মূল গোষ্ঠীর মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যুব সংগঠনের নাম কিছু লোক কালিমালিপ্ত করার জন্য অপপ্রচার করছে।” দিনহাটার এসডিপিও উমেশ জি গণপত বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।” গোটা ঘটনায় দলের নেতাদের অস্বস্তি বেড়েছে। দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “এটা গোষ্ঠী কোন্দলের বিষয় নয়। দুষ্কৃতীরা এ ধরনের কাজ করছে।”
শুক্রবার নয়ারহাট গোবরাছড়ায় তৃণমূলের একটি পার্টি অফিস দখলের অভিযোগও ওঠে যুব তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ওই রাতেই নাজিরহাটের উপপ্রধানের বাড়িতে কর্মীদের বসার ঘর ও গোয়ালঘরে আগুন লাগিয়ে হয় বলে অভিযোগ। নাজিরহাট অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি সুধীর বিশ্বাস বলেন, “উদয়ন গুহের নির্দেশেই ওই অগ্নিসংযোগের ঘটনা হয়।” উদয়নবাবু অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন। তিনি পাল্টা বলেন, “যাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ঝুলছে তারা মানুষের নজর ঘোরাতে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছেন।” পুলিশ সূত্রের খবর, নাজিরহাটে টহলদারি রয়েছে। ওই অভিযোগেরও তদন্ত হচ্ছে।