গুরুঙ্গকে মরতে দেব না: অহলুওয়ালিয়া

এক সময়ে পাহাড়ের লোকজনের একাংশ তাঁর নামে ‘মিসিং ডায়েরি’ অবধি করেন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বিমল গুরুঙ্গের জন্য দিল্লিতে তদ্বির করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা দার্জিলিঙের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। এ দিন তিনি শিলিগুড়ি এসেছিলেন পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রের উদ্বোধনে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৫৪
Share:

শিলিগুড়িতে দার্জিলিঙের সাংসদ সুরেন্দ্র অহলুওয়ালিয়া। —ফাইল চিত্র।

গত বছর জুন থেকে যখন পাহাড়ে গোলমাল শুরু হয়, দীর্ঘদিন তাঁর খোঁজ ছিল না। এক সময়ে পাহাড়ের লোকজনের একাংশ তাঁর নামে ‘মিসিং ডায়েরি’ অবধি করেন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বিমল গুরুঙ্গের জন্য দিল্লিতে তদ্বির করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা দার্জিলিঙের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। এ দিন তিনি শিলিগুড়ি এসেছিলেন পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রের উদ্বোধনে। সেখানে বলেন, ‘‘কিছু এজেন্সি গুরুঙ্গকে এনকাউন্টার করে মেরে ফেলতে চাইছে। আমি ওঁকে মরতে দেব না।’’ অহলুওয়ালিয়া আরও বলেন, ‘‘গুরুঙ্গের সর্বোচ্চ সাজাও হলেও রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করা যায়।’’

Advertisement

অহলুওয়ালিয়ার এ ভাবে গুরুঙ্গের পাশে দাঁড়ানোকে ভাল ভাবে নেননি জিটিএ-র কেয়ারটেকার বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনয় তামাঙ্গ। তাঁর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘দুর্দিনে ওঁকে আমরা কাছে পাইনি। এখন ওঁকে দরকার নেই। উনি পদত্যাগ করলেই পাহাড় খুশি হবে।’’

তামাঙ্গের কথা আমল দিতে চাননি অহলুওয়ালিয়া। বলেন, ‘‘উনি একা আমাকে নির্বাচিত করেননি। দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং, শিলিগুড়ি এবং চোপড়ার কিছু মানুষ আমাকে নির্বাচিত করেছেন। কেউ যদি ভাবে, তাঁর জন্য আমি সাংসদ নির্বাচিত হয়েছি সেটা ভুল।’’ ২০১৪ সালে গুরুঙ্গের সমর্থনে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে দার্জিলিং লোকসভা আসন থেকে জিতেছিলেন অহলুওয়ালিয়া। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি এ দিন বলেন, ‘‘গুরুঙ্গের নেতৃত্বাধীন মোর্চা এনডিএ-র সহযোগী।’’ একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, গুরুঙ্গকে কোনও এজেন্সি মেরে ফেলতে চাইছে। তারা কারা? কোনও জবাব দেননি তিনি। এ তথ্য তিনি কোথায় পেয়েছেন? কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা নাকি অন্য কোনও দফতর থেকে? এরও জবাব দেননি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।

Advertisement

বিনয় শিবির মনে করছে, পাহাড় ঠান্ডা হওয়ার পরে গুরুঙ্গকে ফের প্রাসঙ্গিক করতেই দার্জিলিঙের পাদদেশে শিলিগুড়িতে এসে মুখ খুলেছেন অহলুওয়ালিয়া। মোর্চার আলোচনাপন্থীদের দাবি, সৎ সাহস থাকলে পাহাড়ে গিয়ে বাসিন্দাদের কাছে অনুপস্থিতির কারণ দর্শান উনি। তা হলে পাহাড়ে কি আর যাবেন না অহলুওয়ালিয়া? জবাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘‘পাহাড়ে একটা পাসপোর্ট অ্যাপ্লিকেশন রিসিভিং সেন্টার চালুর প্রস্তাব রয়েছে। সংসদে সেই প্রস্তাব পাশ হলে পরে পাহাড়ে যাব।’’ আগে কেন জাননি, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে জানান, গোলমালের সময়ে গেলে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ উঠত।

প্রশ্ন উঠেছে, দিল্লিতে গুরুঙ্গকে আশ্রয় দেওয়া থেকে শুরু করে তাঁর সঙ্গে কি নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন অহলুওয়ালিয়া? কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘‘এর মধ্যে গুরুঙ্গের সঙ্গে দেখা হয়নি। আমি ওঁর পাশে আছি। বিচার ব্যবস্থায় যদি তেমন সাজাও হয়, রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করা যায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন