কড়া প্রহরায় বিসর্জন উত্তরে

সব জায়গাতেই ছিল প্রশাসনের কড়া নজর। অনেক জায়গাতেই অবশ্য কম বিসর্জন হয়েছে। তাই বহু জনপদেই এখনও পুজোর রেশ রয়ে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৭ ০১:২৮
Share:

বিসর্জনের আগে সিঁদুরখেলায় মেতেছেন মহিলারা। আলিপুরদুয়ারে।

একাদশীর দিন উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় বিসর্জন হয়েছে। এ দিন ছিল মহরম। তাও পালিত হয়েছে। সব জায়গাতেই ছিল প্রশাসনের কড়া নজর। অনেক জায়গাতেই অবশ্য কম বিসর্জন হয়েছে। তাই বহু জনপদেই এখনও পুজোর রেশ রয়ে গিয়েছে।

Advertisement

অন্য রাস্তায়

Advertisement

শিলিগুড়িতে রবিবার দুপুর অবধি ৬টির মতো বাড়ি ও ছোট পুজোর বিসর্জন হয়েছে। তবে বড় কোনও সর্বজনীন পুজোর বিসর্জন হয়নি। যে ৬টির মত পুজোর উদ্যোক্তারা ঘাটে পৌঁছেছেন, তাদের সকলকে হিলকার্ট রোডের বদলে অন্য রাস্তা দিয়ে ঘাটে যেতে হয়েছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় ৪৮০টির মতো পুজো হচ্ছে। এর বাইরে অন্তত ২৫০টি বাড়ির ও ছোট পুজো রয়েছে। এই পুজোগুলির অবশ্য পুলিশের অনুমতি থাকে না। তবে বড় পুজো কমিটিগুলি, কেউই এদিন বিসর্জনের জন্য আবেদনই করেনি বলে পুলিশ জানিয়েছে।

মিলন মেলা

বিজয়া দশমীতে অসম-বাংলার বাসিন্দাদের মিলন মেলায় মাতল কোচবিহারের বক্সিরহাট। এক সঙ্গে শোভাযাত্রা করে মেলা চত্বরে সামিল হলেন দুই রাজ্যের পুজো উদ্যোক্তারা। এমনকি বিসর্জনও হল এক ঘাটে। ঝিরঝিরে বৃষ্টি উপেক্ষা করে দুই রাজ্যের উৎসাহী বাসিন্দাদের উপচে পড়া ভিড় হয়। উদ্যোক্তাদের দাবি, ৫০ হাজারের বেশি মানুষের সমাগম হয়। বক্সিরহাট বাজার লাগোয়া ময়দানে শনিবার সন্ধ্যায় মেলার উদ্বোধন করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। চলেছে অনেক রাত পর্যন্ত। উদ্যোক্তারা জানান, মিলন মেলার এ বার ২৮তম বর্ষ। অসমের ধুবুরি, কোকরাঝাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা ব্যবসা, চিকিৎসা সহ নানা প্রয়োজনে নিত্য যাতায়াত করেন। পুজো দেখতেও দুই রাজ্যের মণ্ডপে যান সংশ্লিষ্ট বাসিন্দাদের অনেকে। ওই মেলবন্ধন মজবুত করার ভাবনা থেকেই মেলার সূচনা।

বড় পুজো মণ্ডপেই

রবিবার দুপুর পর্যন্ত বিসর্জন হয়েছে মালদহের ঘাটগুলিতে। তবে ইংরেজবাজার শহরের অধিকাংশ বিগ বাজেটের পুজো মণ্ডপগুলিতে প্রতিমা রয়েছে। ফলে একাদশীর দিনেও পুজোর আমেজ রয়েছে শহর জুড়ে। সেই সঙ্গে প্রতিমা দেখার ভিড় রয়েছে মন্ডপ গুলিতে। তবে মহরমের শোভাযাত্রার কারণে শহরের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ রুটের আলোকসজ্জা খুলে ফেলা হয়েছে। শহরের মিশন ঘাটে দুপুর তিনটে পর্যন্ত মোট ১৫টি ছোট বড়ো ক্লাবের প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে। সেই সঙ্গে কিছু বাড়ির পুজোরও বিসর্জন হয়েছে। সোমবার শহরের প্রায় সমস্ত পুজোর বিসর্জন হবে। শহরে মহরম উপলক্ষে তাজিয়া নিয়ে শোভাযাত্রা সন্ধের পর বের হয়। শহরের ২২টি লাঠি খেলার দল একসঙ্গে শোভাযাত্রায় সামিল হয়।

দুপুরেই নিরঞ্জন

মহরমের পাশাপাশি দুর্গা প্রতিমার বিসর্জনও অনুষ্ঠিত হল কোচবিহারে। অবশ্য দুটি দেবী প্রতিমার বিসর্জন হয় এদিন। মেখলিগঞ্জ মহকুমার নিজতরফ ও জামালদহ এলাকায় দুপুরের মধ্যেই বিসর্জন হয়। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, আবেদনের ভিত্তিতে সমস্তরকম নিরাপত্তা খতিয়ে দেখে ওই দুটি পুজো কমিটিকে ভাসানের অনুমতি দেওয়া হয়। অন্য দিকে কোচবিহার সহ জেলা জুড়েই মহরম পালিত হয়। কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের উদ্যোগে মহরমের শোভাযাত্রা বের হয় হরিণচওড়া থেকে।

মহরম পিছোল

মহরম পালন চলছে কোচবিহারে।

মহরমের দিনই ইসলামপুরে দশমী উপলক্ষে মেলার আয়োজন হয়েছে কুন্দরগাও কালী বাড়ি এলাকাতে। সেখানে প্রতিমা বিসর্জন হবে। অপর দিকে, গোয়ালপোখর থানার সাহাপুরে অবশ্য মহরম এক দিন পিছিয়েছে। রবিবার এলাকাতে হাট বসায় সোমবার মহরমের আয়োজন করা হয়েছে। তাই রবিবার প্রতিমা বিসর্জনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

শুধু বাড়ির পুজো

রবিবার রায়গঞ্জের খরমুজাঘাট এলাকার কুলিক নদীতে তিনটি বাড়ির পুজোর প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে! পুলিশের অনুরোধে পুজো উদ্যোক্তারা দিনের বেলায় প্রতিমা বিসর্জন দিয়ে দেন। পুলিশের নজরদারি ছিল। অন্য দিকে, চাকুলিয়ায় তিনটি বড় দুর্গাপুজো কমিটি প্রতিমা বিসর্জন স্থগিত রেখেছেন। আগামী বুধবার তাঁরা প্রতিমা বিসর্জন দেবেন। হেমতাবাদের সোনাবাড়ি এলাকার একটি ক্লাবও এদিন দিনের বেলায় প্রতিমা বিসর্জন দিয়েছে। কোথাও কোনও গোলমাল হয়নি বলে দাবি করেছে পুলিশ।

—নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement