গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় রাজেশ সরকারের। —ফাইল চিত্র।
দশ বছরে এই প্রথম ইসলামপুরের সুখানিভিটা গ্রামে দুর্গাপুজো বন্ধ হচ্ছে। গ্রামের পুজো অন্ত প্রাণ ছেলেটা পুলিশের গুলিতে মারা যাওয়ার পরে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাসিন্দারা। তাঁরা বলছেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে আমরা পুজোর কথা ভাবতে পারছি না।’’
ইসলামপুরের সুখানিভিটা গ্রাম বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া। ওই গ্রামের একমাত্র পুজো বৃহস্পতিবার গুলিতে মৃত ছাত্র রাজেশ সরকারের বাড়ির সামনেই হত। আশপাশের বাসিন্দারা পুজোর কাজে হাত লাগালেও মূল দ্বায়িত্বে থাকতেন রাজেশই। ওই দিন বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ বাড়ির কাছেই দাড়িভিট স্কুলে বোনের আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়ে তিনি স্কুলে যান। সেখানেই আক্রান্ত হন তিনি। গুলি তাঁর বুকে লাগে। বাসিন্দারা উদ্ধার করে তাঁকে ইসলামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই ওই দিন তিনি মারা যান। তার পর থেকেই সুখানিভিটায় শোকের আবহ। ওই গ্রামে প্রায় ২৫টি পরিবারের বাস। গ্রামের ছোট থেকে বড়রা রাজেশদের বাড়ির সামনে দুর্গাপুজোয় প্রতি বছরই আনন্দে মেতে থাকতেন। দশ বছর ধরে নিয়ম মেনেই পুজো করতেন বাসিন্দারা।
ওই গ্রামের প্রতিমা শিকদার, চায়না মজুমদার, গঙ্গা বিশ্বাসরা বলেন, ‘‘রাজেশের এ ভাবে চলে যাওয়াটা আমরা মেনে নিতে পারছি না। সবাই মিলে পুজো করলেও মুখ্য ভূমিকায় রাজেশই থাকত। ওই না থাকলে পুজো হবে কী ভাবে?’’
পাড়ার বাসিন্দারা বলছেন, পুজোর প্রসাদ খাওয়া থেকে শুরু করে গ্রামের কারও নতুন জামা কাপড় কিছু না জুটলে সব সময়ে এগিয়ে আসতে দেখা যেত রাজেশকে। কেউ বিপদে পড়লে সবার আগে রাজেশই থাকতেন। ঘটনার দিনেও ভাইবোনেদের জন্য স্কুলে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। এ বার বিপদ থেকে বোনকে বাঁচাতে পারলেও নিজেই ফিরতে পারলেন না বিপদের মুখ থেকে। তাই পুজো এ বার বন্ধই সুখানিভিটায়।