Facebook Live

‘গুলি করে মেরে ফেল’, মাঝরাতে ফেসবুক লাইভ টিএমসিপি নেতার

মাঝরাতে অন্ধকার মাঠে টিএমসিপি নেতার এমন ‘ফেসবুক লাইভ’ নিয়ে চর্চা ছড়াল চাঁচলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

চাঁচল শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২০ ০৭:৫৬
Share:

ফেসবুক ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।

রাত তখন ১টা। এলাকার কলেজ হস্টেল মাঠে দাঁড়িয়ে টিএমসিপি নেতা। দলীয় সূত্রে খবর, ‘ফেসবুক লাইভে’ সংগঠনের কয়েক জনকে উদ্দেশ্য করে তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে— ‘‘তোদের কথা মতো মাঠে একা এসেছি। আয় আমাকে গুলি করে মেরে ফেল। অনেক সহ্য করলাম। প্রতি দিন আর এ সব ভাল লাগে না।’’

Advertisement

মাঝরাতে অন্ধকার মাঠে টিএমসিপি নেতার এমন ‘ফেসবুক লাইভ’ নিয়ে চর্চা ছড়াল চাঁচলে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘লাইভ’ ভিডিয়ো দেখে হতবাক নেতাদের অনেকেই তাঁকে বাড়ি ফিরে যেতে বলেন। শেষে সংগঠনেরই এক নেতা মাঠে গিয়ে তাঁকে নিয়ে বাড়িতে ফেরেন।

তাঁকে যারা খুনের হুমকি দিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানানো হবে বলে জানিয়েছেন ওই টিএমসিপি নেতা মোকাদ্দেম হোসেন ওরফে বাবু সরকার। যদিও মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এমন কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

চাঁচলের এসডিপিও সজলকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘‘অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

চাঁচলে টিএমসিপি সংগঠনেও যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছায়া পড়েছে, এমন ঘটনা তারই প্রমাণ দিল বলে মনে করছেন দলের নেতাদেরই একাংশ।

মুখ্যমন্ত্রীর মালদহ সফরের মুখে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাত্র সংগঠনের নেতাদের এমন ‘দ্বন্দ্ব’ প্রকাশ্যে আসায় অস্বস্তিতে তৃণমূল নেতৃত্ব। কেন এমন হল তা খতিয়ে দেখে সমস্যা মেটানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে।

দেখুন সেই ফেসবুক লাইভ

মোকাদ্দেম ওরফে বাবুর অভিযোগ, কয়েক দিন ধরে টিএমসিপি-র কয়েক জন তাঁকে গুলি করে খুন করার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর নালিশ, ওই নেতা-কর্মীরা চাঁচল কলেজের প্রথম বর্ষের কয়েক জন ছাত্রকে হুমকি দিয়েছিলেন। তিনি তার প্রতিবাদ করেন। তার পরেই তাঁকে গুলি করে মারার হুমকি দেওয়া শুরু হয় বলে অভিযোগ।

সংগঠন ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বাবু টিএমসিপির চাঁচল-১ ব্লকের কার্যকরী সভাপতি। ছাত্র সংগঠনের পাশাপাশি সামাজিক কাজকর্মের সঙ্গেও তিনি জড়িত। ছাত্রদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় হওয়ায় তাঁকে সংগঠন থেকে সরানোর জন্য নেতাদের একাংশ উঠেপড়ে লেগেছেন বলে তাঁর অভিযোগ।

বাবুর নালিশ, ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, ফোন করে তাঁকে ক্রমাগত খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সোমবার রাতে ওই মাঠে তাঁকে একা আসতে বলেও বারবার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। তার পরেই মাঝরাতে মাঠে একা চলে যান তিনি।

বাবু এ দিন বলেন, ‘‘হুমকি আর সহ্য হচ্ছিল না। রাতে আমাকে ওরা একা আসতে বলেছিল। এসেছি কি না তা জানিয়ে ফেসবুকে লাইভ করতে বলে। তাই আমি যে মাঠে এসেছি সেটাই ওদের জানিয়েছিলাম। ওদের পিছনে তৃণমূলের কে রয়েছেন তাও আমি জানি।’’

বাবুর ‘ফেসবুক লাইভ’ দেখে কলকাতা থেকে মন্তব্য করে তাঁকে বাড়ি ফিরে যেতে বলেছিলেন জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রফিকুল হোসেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘ওরা অপরিণত। তাই আবেগে এ সব করে ফেলেছে। কোথায়, কী সমস্যা তা সবাইকে নিয়ে বসে আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন