Maldah

৪০০ টাকা চুরির অপবাদে ছাত্রের ‘পিঠের ছাল’ তুলে নিলেন শিক্ষক! বিচার চেয়ে আদালতে পরিবার

ওঝা এসে ছাত্রকে মন্ত্রপুত ওষুধ খাওয়ানোর ভয় দেখিয়ে চুরির কথা স্বীকার করতে বলে। কিন্তু ছাত্রটি জানায়, সে চুরি করেনি। অভিযোগ, এর পর তাকে প্রচণ্ড মারধর করেন শিক্ষক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালিয়াগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২২ ২১:০৯
Share:

ছাত্রের অভিযোগ, তার কোনও কথাই শোনেননি শিক্ষক। বেধড়ক মারধর করা হয় তাকে। —নিজস্ব চিত্র।

টাকা চুরি করেছে ছাত্র। এই অভিযোগে তাকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। মারের চোটে খুদের পিঠের ত্বক ছড়ে যায় বলে দাবি করেছে তার পরিবার। পাশাপাশি, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় গেলে পুলিশ বিষয়টি ‘মিটিয়ে’ নিতে বলে অভিযোগ। এর পর বেসরকারি ওই আবাসিক মাদ্রাসার শিক্ষকের বিরুদ্ধে আদালতে গিয়েছে ছাত্রের পরিবার। ঘটনাটি মালদহ জেলার কালিয়াচক থানার গোলাপগঞ্জ ফাঁড়ি এলাকার।

Advertisement

আক্রান্ত ছাত্রের বাড়ি বৈষ্ণবনগর থানার গোপালপুর এলাকায়। কালিয়াচকের একটি আবাসিক মাদ্রাসা স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র সে। অভিযোগ, তাকে ৪০০ টাকা চুরির অপবাদ দেন স্কুলের শিক্ষক সৈয়দ আখতার। ছাত্রটি জানায়, সে চুরি করেনি। এর পর তাকে স্কুলে আটকে রেখে ওঝা ডাকা হয় বলে অভিযোগ। ওঝা এসে ছাত্রকে মন্ত্রপুত ওষুধ খাওয়ানোর ভয় দেখিয়ে চুরির কথা স্বীকার করতে বলে। কিন্তু ছাত্রটি জানায়, সে চুরি করেনি। অভিযোগ, এর পর তাকে প্রচণ্ড মারধর করেন শিক্ষক। মারের চোটে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ভর্তি করানো হয় হাসপাতালে। খবর পেয়ে ছুটে আসে বাচ্চাটির পরিবার।

ছাত্রটির বাবা মোবারক হোসেন বলেন, ‘‘গত শনিবার আমার ছেলেকে টাকা চুরির অপবাদ দেন শিক্ষক। তার পর ওকে লাঠি দিয়ে মারার পাশাপাশি ঘরে আটকে রেখে মন্ত্রপুত ওষুধ খাওয়ানোর ভয় দেখানো হয়। মেরে ওর পিঠের ছাল তুলে দিয়েছে!’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা এটা জানতে পেরে ওই মাদ্রাসা মিশন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি বিস্তারিত ভাবে জানতে চাই। কিন্তু ওঁরা কোনও কথা বলতে চাননি। এর পর গোলাপগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে যাই। কিন্তু সেখানে থেকেও আমাদের ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। তাই বাধ্য হয়ে আমরা এক আইনজীবীর সাহায্য নিয়ে সুবিচারের আশায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।’’

Advertisement

আক্রান্ত ওই ছাত্রের পক্ষের আইনজীবী মহম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘এই ধরনের শিক্ষকের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। ঘরে বন্ধ করে রাখা হয় ছাত্রকে। নির্মম ভাবে মারধর করা হয়। কেন অন্যান্য শিক্ষাকর্মী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেন না, সেটাও বুঝতে পারছি না। পুলিশের ভূমিকাও হতাশাজনক।’’ তিনি জানান, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে নাবালক পডুয়াকে মারধর, শারীরিক নির্যাতন-সহ বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা করা হয়েছে।

এই অভিযোগ প্রসঙ্গে ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হননি। অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে কোনও রকম ভাবে যোগাযোগ করা যায়নি। পাশাপাশি গোলাপগঞ্জ ফাঁড়ির পুলিশও এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেনি।

মালদহ জেলার পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, ‘‘এ নিয়ে খোঁজ নিয়ে মন্তব্য করব। এমন ঘটনা ঘটে থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন