ঘুম ছুটেছে কোজাগরীর মুখে

বন্যায় শস্যের ক্ষতিতে ঘাটতি

রাত পোহালেই ধনদেবী লক্ষ্মীর আরাধনা। ফলের পাশাপাশি আনাজের দামও চড়ছে জেলার খুচরো এবং পাইকারি বাজারগুলোতে। শুধু ইংরেজবাজার শহরই নয়, আনাজের অগ্নিমূল্যের জেরে গ্রাম বাংলার বাজারগুলোতেও বচসা বাড়ছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে। 

Advertisement

অভিজিৎ সাহা 

মালদহ শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৯ ০৫:৩৮
Share:

আগুন: আনাজের দাম আকাশছোঁয়া। বালুরঘাটের বাজারে। নিজস্ব চিত্র

ইংরেজবাজার শহরে রথবাড়ি বাজার। হরেক রকমের আনাজের পসরা সাজিয়ে বসে রয়েছেন বিক্রেতারা। শুক্রবার সকালে ব্যাগ হাতে বাজারে হাজির শহরেরই বাসিন্দা বিনয় সরকার। লঙ্কার দাম কত ? বিক্রেতার মুখে ৮৬ টাকা শুনে চেঁচিয়ে উঠলেন বিনয়। তিনি বলেন, “দু’দিন আগেই তো লঙ্কার দাম ছিল ৭০ টাকা কেজি। মাত্র ৪৮ ঘন্টায় ১৬ টাকা বেড়ে গেল লঙ্কার দাম! আর দু’দিন বাদে বাজারে এলে শুনতে পাব লঙ্কা দামে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে।” লঙ্কার মতো পেঁয়াজ, রসুন, পটল, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুনের দাম আকাশ ছোঁয়া। আনাজের অগ্নিমূল্যের জেরে মালদহের বাজার গুলিতে দৈনিক বাড়ছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে বচসা।

Advertisement

রাত পোহালেই ধনদেবী লক্ষ্মীর আরাধনা। ফলের পাশাপাশি আনাজের দামও চড়ছে জেলার খুচরো এবং পাইকারি বাজারগুলোতে। শুধু ইংরেজবাজার শহরই নয়, আনাজের অগ্নিমূল্যের জেরে গ্রাম বাংলার বাজারগুলোতেও বচসা বাড়ছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে।
এ দিন মালদহের বাজারে পেঁয়াজ ৫৫ টাকা কেজি, ফুলকপি ৮২টাকা কেজি, বাঁধাকপি ৪৫ টাকা কেজি, পটল ৪২ থেকে ৪৫ টাকা কেজি, বেগুন ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি, বরবটি, করলা, ঝিঙে দাম হাফ সেঞ্চুরি ছুঁইছুঁই। ফলের দামও অগ্নিমূল্য বাজারগুলোতে। আপেল ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি, মৌসম্বী ৮০ টাকা কেজি, আনারস ৫০ টাকা প্রতিপিস, পেয়ারা ৪০ টাকা কেজি, পানিফল ৬০ টাকা কেজি, আখ প্রতিপিস ২০ টাকা, নারকেল ৪০টাকা পিস, ডাব প্রতি পিস ৪৫ টাকা, তালশাঁস প্রতি পিস দশ টাকা।

পুজোর মরসুমে প্রতিবারই আনাজের দাম থাকে ঊর্ধ্বমুখী। তবে এ বারে দাম আকাশ ছোঁয়া বলে মনে নিয়েছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ।
আনাজের দাম কেন অগ্নিমূল্য?

Advertisement

ব্যবসায়ীদের একাংশ জানান, জেলার একাধিক ব্লক বন্যার জলে প্লাবিত। চাষ-বাসের জমি জলের তলায় রয়েছে। এ ছাড়া টানা বৃষ্টিতেও আনাজের ক্ষতি হয়েছে। যার জন্য বাজারগুলোতে আনাজের দাম। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বারে বন্যায় জেলায় প্রায় ১৪০ কোটি টাকা ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ধান, গম, পাটের পাশাপাশি আনাজেও প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে জেলার বাজারগুলোতে। আনাজ ব্যবসায়ী নবকুমার সাহা বলেন, “পাইকারি বাজার থেকেই চড়া দামে আনাজ ক্রয় করতে হচ্ছে। তাই আমাদেরও বাধ্য হয়েই দাম বেশি নিতে হচ্ছে ক্রেতাদের কাছ থেকে।” মালদহের ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক জয়ন্ত কুন্ডু বলেন, “পরিবহণ খরচও বেড়ে গিয়েছে অনেকটা। রানাঘাট থেকে আগে আনাজ আনতে ছ’হাজার টাকা লাগত। এখন সাড়ে আট হাজার টাকা লাগছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন