এমন সামিয়ানাতেই চলছে বিয়ের আয়োজন। — সন্দীপ পাল
সামিয়ানার সামনে বৈকুন্ঠপুরের রাজবাড়ির সিংহদুয়ারের আদলে তোরণ। সামিয়ানার ভিতরের আয়োজনও রাজকীয়। বিশাল মাঠ জুড়ে পড়েছে সামিয়ানা। ভিতরে একসঙ্গে বসতে পারবেন হাজার লোক, এমনটাই দাবি। ভিভিআইপিদের জন্য পৃথক বসার জায়গা। তাঁদের খাওয়ার জন্যও আলাদা ঘেরাটোপ। মাঝখানে সুসজ্জিত চারটি স্তম্ভ। আলো ঝলমলে দু’টি মঞ্চ থাকছে। একটিতে হবে রবীন্দ্রসঙ্গীত-ভাওইয়ার অনুষ্ঠান। অন্য মঞ্চে বসবেন নব দম্পতি।
তৃণমূল সাংসদ বিজয় চন্দ্র বর্মনের ছেলের বউভাতের এই আয়োজনের বহর মুখে মুখে ফিরছে জলপাইগুড়ি শহরে। জলপাইগুড়ির মিলন সঙ্ঘ মাঠে পেল্লায় সামিয়ানায় আজ রবিবার সাংসদের ছেলের বিয়ের প্রীতিভোজ। তৃণমূল সূত্রের খবর নিমন্ত্রিতের সংখ্যা চার হাজার ছুঁইছুঁই। সাংসদ নিজে অবশ্য দাবি করেছেন, দু’হাজারের কাছাকাছি সংখ্যক নিমন্ত্রিত রয়েছে। উত্তরবঙ্গের মন্ত্রী-দলের বিধায়করা সকলেই আসবেন বলে বলে জানা গিয়েছে। সাংসদের আশা মুকুল রায় সহ রাজ্য নেতাদের কয়েকজনও নবদম্পতিকে আর্শীবাদ করতে আসবেন।
পুরোনো পাঁচশো হাজারের নোট বাতিল এবং ব্যাঙ্কের বিধিনিষেধের জেরে অনেক বরপক্ষ কনেপক্ষের লোকজনকে বিয়ের কার্ড হাতে লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। তৃণমূল সাংসদ জানিয়েছেন নোট-পরিস্থিতির জেরে তার ছেলের বিয়ের আয়োজনেও কাটছাঁট করতে হয়েছে। কমেছে নিমন্ত্রিতের সংখ্যাও। নগদের অভাবে কেটারিঙের পরিবর্তে নিজেরাই সব আয়োজন করছেন বলে সাংসদের দাবি। গত শনিবারই কোচবিহারের গুড়িয়াহাটির শিক্ষক পল্লী বাসিন্দা পাত্রীর সঙ্গে সাংসদের একমাত্র পুত্রের বিয়ে হয়েছে৷ আজ, রবিবার প্রীতিভোজ। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল পড়ুয়ার রবীন্দ্র সঙ্গীত ও ভাওয়াইয়া গাওয়ার কথা৷
সূত্রের খবর, সাংসদের একমাত্র ছেলের বিয়ের জন্য প্রথমে নিমন্ত্রিতের তালিকায় প্রচুর লোক থাকলেও, নোট সমস্যার জেরে সেটা কমে দাড়িয়েছে সাড়ে তিন হাজারে৷ যদিও সাংসদ নিজে অবশ্য বলছেন নিমন্ত্রিতের সংখ্যা দু’হাজারের কাছাকাছি৷ তবে নিমন্ত্রিতের সংখ্যা যাই থাকুক না কেন, শেষ পর্যন্ত সেই সংখ্যা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলেও মনে করছেন ঘনিষ্ঠরা।
বিজয়বাবু এ দিন বলেন, “একমাত্র ছেলের বিয়ে ৷ ইচ্ছে ছিল আরো অনেককে নিমন্ত্রণ করার৷ কিন্তু নোট সমস্যার জন্য ব্যাঙ্ক থেকে আড়াই লক্ষ টাকাই তুলতে পেরেছি৷ তাই অনেকের থেকে টাকা ধারও করতে হয়েছে৷ অনেক ক্ষেত্রে চেকেও মেটাতে করতে হয়েছে৷ সমস্যার জন্যই খরচ বাঁচাতে নিজেরাই বাজার করেছি৷” সাংসদের ছেলের বিয়েতে ভিভিআইপি-দের আসার কথা থাকায় চিন্তা কম নেই পুলিশেরও৷ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, নিরাপত্তার জন্য রবিবার প্যান্ডেল চত্বরে উর্দিধারীদের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশও থাকছে।