উপাচার্যের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরেও কলকাতায় বসেই গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করছিলেন গোপালচন্দ্র মিশ্র। ২৯ নভেম্বর কলকাতাতেই এক্সজিকিউটিভ কাউন্সিল কমিটির বৈঠক ডেকেছিলেন তিনি। সেই বৈঠক বাতিল করলেন গোপালবাবু।
গত ১৫ নভেম্বর শাসক দলের দু’দল ছাত্র আন্দোলনের চাপে ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। যদিও সেই পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়ায় তিনি কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে বিকাশ ভবন থেকে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে স্বাগত সেনের নাম আসতেই তড়িঘড়ি বৈঠক বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ঘনিষ্ঠ মহলে গোপাল বাবু জানিয়েছে, “আমার পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়ায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলাম। তবে পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে। তাই বৈঠক বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিত্ত আধিকারিক জাহির হোসেনের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতরের নির্দেশে গঠিত হওয়া তদন্ত কমিটির প্রতিনিধি দল বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছেন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমনাথ ঘোষ তদন্ত করবেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে দু’দিন থাকবেন। অভিযোগ, জাহির হোসেন ভুয়ো শংসাপত্র জমা দিয়ে বিত্ত আধিকারিকের পদে রয়েছেন। এই নিয়ে রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতরের নির্দেশে মাস খানেক আগে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছিল। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও পৃথক ভাবে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। যার জন্য আপাতত ছুটিতে পাঠানো হয়েছে জাহির হোসেনকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় ক্ষুব্ধ জেলার শিক্ষা মহল। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় একাধিক তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। রুসার টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় রাজ্যের নির্দেশে তদন্ত করে দেখছে জেলা প্রশাসনও। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আদর্শ পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ। জেলা কংগ্রেসের সভানেত্রী সাংসদ মৌসম নূর বলেন, “শাসক দলের দুগোষ্ঠী ক্ষমতা দখলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘেরাও আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। এদিকে, আধিকারিকেরা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। যার ফল ভুগছে গৌড়বঙ্গের ছেলে মেয়েরা।” গৌড়বঙ্গের ওয়েবকুপার আহ্বায়ক সাধন সরকার বলেন, “আমরা চাই দুর্নীতি মুক্ত পরিবেশ। আমাদের নয়া উপাচার্য সেই চেষ্টা করবেন বলে আশাবাদী। আর আমাদের তরফেও তাঁকে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করা হবে।”