বৃষ্টি-মাথায়: জলপাইগুড়ি নেতাজি পাড়ায়। নিজস্ব চিত্র
বৃষ্টি চলছেই। তাই জমা জল নামলেও বৃষ্টি বন্ধ না হওয়ায় আশঙ্কার মেঘ রয়েই গিয়েছে জলপাইগুড়ি শহরে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস সেই আশঙ্কাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। শনিবার, রবিবারের পরে সোমবারও প্রায় সারাদিন বৃষ্টি হয়েছে। কখনও হালকা, কখনও ভারী বৃষ্টিপাত। জলপাইগুড়ি শহরে গত দু’দিনে মোট বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় পৌনে তিনশো মিলিমিটার।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, আগামী চব্বিশ ঘণ্টায় জলপাইগুড়ি জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে। তিস্তা ব্যারাজ থেকেও জল ছাড়া অব্যাহত রয়েছে। করলা নদীর জলস্তর এখনও বিপদসীমা ছুঁয়ে রয়েছে। গত শনিবার থেকে লাগাতার বৃষ্টিতে ডুবে গিয়েছিল জলপাইগুড়ি পুর এলাকার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড। এর মধ্যে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের পরেশ মিত্র কলোনির দেড়শোটি বাড়ি প্রায় জলের তলায় চলে গিয়েছিল। বাসিন্দারা অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু সোমবার সকাল থেকে বৃষ্টি কমায় কিছু মানুষ বাড়িতে ফিরে গিয়েছেন। যদিও, এখনও অনেকে লাগোয়া সেতুর আশেপাশে উঁচু রাস্তায় এসে আশ্রয় নিয়েছেন।
বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, গত কয়েকদিন ধরে জলবন্দি হয়ে থাকলেও উদ্ধারকারী কোনও দল আসেনি। ত্রাণেরও কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি বলে অভিযোগ। পরেশ মিত্র কলোনির পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে করলা নদী। নদীর জল যাতে এলাকায় না ঢোকে সে জন্য সেচ দফতর একটি ছোট বাঁধ দিয়েছিল। সেই বাঁধের বিভিন্ন জায়গায় ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। তা দিয়েই জল ঢুকছে এলাকায়। এলাকার কাউন্সিলর পরিমল মালোদাস বলেন, “বাঁধ এত নীচু করে তৈরি হয়েছে যে নদীর জলস্তর একটু বাড়লেই সেই জল উপচে এলাকায় ঢুকে পড়ে। এ নিয়েও সেচ দফতরকে জানানো হয়েছিল। কোনও ফল হয়নি।“
স্থানীয় বাসিন্দা রঞ্জন মজুমদারের অভিযোগ, ‘‘একাধিকবার প্রশাসনিক স্তরে জানানো সত্ত্বেও কোনও সুরাহা হয়নি। সামান্য বৃষ্টি হলেই জল ঢুকে যাচ্ছে।’’ অপেক্ষাকৃত নীচু এলাকা হওয়ায় সেই জল জমে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। সেচ দফতরের জলপাইগুড়ির নির্বাহী বাস্তুকার জয়প্রকাশ পাণ্ডে বলেন, “পরিস্থিতির ওপরে নজর রাখা হয়েছে। বাঁধে যেখানে গর্ত হয়েছে সেই এলাকা সংস্কার করা হবে।’’