প্রতিদিন ইনসুলিন নিয়েও ৬৭৮

আর মাত্র চারটি নম্বর পেলে সৌমিলি বন্দ্যোপাধ্যায় মাধ্যমিকে কৃতীদের তালিকায় ঢুকে পড়তেন। ৯ বছর বয়স থেকে ব্লাড সুগারের জন্য প্রতি দিন চারটে করে ইনসুলিন ইনজেকশন নিয়ে মাধ্যমিকে ৬৭৮ নম্বর পেল ধূপগুড়ি হাই স্কুলের এই ছাত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ধূপগুড়ি শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৭ ০২:৪৩
Share:

মার্কশিট হাতে সৌমিলি বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

আর মাত্র চারটি নম্বর পেলে সৌমিলি বন্দ্যোপাধ্যায় মাধ্যমিকে কৃতীদের তালিকায় ঢুকে পড়তেন। ৯ বছর বয়স থেকে ব্লাড সুগারের জন্য প্রতি দিন চারটে করে ইনসুলিন ইনজেকশন নিয়ে মাধ্যমিকে ৬৭৮ নম্বর পেল ধূপগুড়ি হাই স্কুলের এই ছাত্রী।

Advertisement

সৌমিলির ফলে খুশি তার বাবা-মা প্রতিবেশী ও স্কুলের শিক্ষকরা। অসুস্থতার কারণে চতুর্থ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত তার স্কুলে যাওয়াও অনিয়মিত ছিল। নবম শ্রেণিতে ওঠার পর তার পড়াশুনা চালানো নিয়েই চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন ধূপগুড়ি হাই স্কুলের শিক্ষক গুণময় বন্দ্যোপাধ্যায় ও ধূপগুড়ি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী মা সুচিস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে সময় ব্লাড সুগারের ফলে জীবন নিয়ে টানাটানি শুরু হয় সৌমিলির। জলপাইগুড়ির একটি নার্সিংহোমে টানা পাঁচ দিন আইসিইউতে ভর্তি থাকতে হয়েছিল।

ছোট বেলা থেকে অসুস্থতার কারণে দেশের নানা জায়গায় নিয়ে গিয়ে নামিদামি চিকিৎসক দেখানো হলেও পুরো সুস্থ হয়নি সৌমিলি। তবে সৌমিলি জানায়, সে নিজেকে কখনওই অসুস্থ ভাবে না। পড়াশোনা, বাড়িতে ছোট বোনের সঙ্গে খেলা, মাঝে মধ্যে গল্প কবিতা লেখাই তার ধ্যানজ্ঞান। ধূপগুড়ি গালর্স স্কুলের পড়ুয়া সৌমিলি বলে, ‘‘বড় হয়ে আরও লেখাপড়া শিখে ক্যানসার বা ব্লাড সুগার নিয়ে গবেষণা করতে চাই। কেউ যেন ক্যানসার বা আমার মতো ব্লাড সুগারে না ভোগে, তা থেকে মুক্তি দিতেই গবেষণায় ডুব দেওয়ার ইচ্ছা।’’ তার বাবা-মা দু’জনেই সৌমিলির কোনও ইচ্ছার উপর নিজেদের মত চাপাতেন চান না। তাঁদের কথায়, ‘‘মেয়েকে কোনও দিনই আমাদের কোনও কথা চাপাইনি। পড়াশোনার ব্যাপারেও তাঁকে কিছু বলি না। ওর যখন, যতক্ষণ খুশি পড়ে।’’ মা সুচিস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নিজের কোনও ইচ্ছার কথা কোনও দিনই বলিনি। কিন্তু মেয়ের ভবিষৎ নিয়ে সব সময় চিন্তা হয়। ” বাবা গুণময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ ভারতবর্ষে দুঃস্থ পরিবারের অনেকে ব্লাড সুগারের কারণে ব্যয়বহুল ইনসুলিন না নিতে পেরে অকালে চলে যাচ্ছে। তাঁদের জন্য সরকারের কোনও ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন