অসুখের দিনরাত্রি
India Lockdown

নেই রাজ্যে ওঁরা, চান দু’মুঠো ভাত

দিনহাটার ঝুড়িপাড়ার বাসিন্দা রোহিত শেখ জানান, গাজিয়াবাদের একটি এলাকায় তাঁরা চল্লিশ জন একই সঙ্গে রয়েছেন।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২০ ০৭:৩৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

বাড়ি ফেরার উপায় নেই। হাতে কাজ নেই। জমানো টাকাও শেষ বলা চলে শেষ। ঘর থেকে বেরোলেই তাড়া করছে পুলিশ। কোচবিহার তথা উত্তরবঙ্গের লক্ষাধিক শ্রমিক এমন ভাবেই দিনযাপন করছেন ভিন্ রাজ্যে। কেউ দিল্লিতে, কেউ কেরলে, কেউ মুম্বইয়ে তো কেউ কাশ্মীরে। তাঁদের প্রায় প্রত্যেকেরই এখন একটি দাবি: ‘‘দু’বেলা দু’মুঠো ভাত চাই।’’

Advertisement

তাঁদের অনেকেরই অভিযোগ, কেউ কোনও সরকারি সাহায্য পাননি। কেউ কেউ জানিয়েছেন, এক-দু’দিন খাবার মিললেও তার পরেই আবার তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের কাছে বারবার আবেদন করেও লাভ হচ্ছে না। পশ্চিমবঙ্গ সরকার আশ্বাস দিলেও তাঁরা পড়ে আছেন তিমিরেই।

দিনহাটার ঝুড়িপাড়ার বাসিন্দা রোহিত শেখ জানান, গাজিয়াবাদের একটি এলাকায় তাঁরা চল্লিশ জন একই সঙ্গে রয়েছেন। গত এক মাসের লকডাউনে চার থেকে পাঁচ দিন খাবার পেয়েছেন। সকালে খিচুড়ি, রাতে রুটি বা ভাত। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে তা বন্ধ। তাঁরা সকলেই একটি প্লাইবোর্ড কারখানায় কাজ করেন।

Advertisement

তাঁরা বলেন, “সামান্য টাকা মাসে আয় করি। এক মাস ধরে কাজ নেই, হাতে টাকা নেই, নেই খাবারও। এখন আমরা বাড়ি ফিরতে চাই।” কার্যত ভেঙে পড়েছেন রোহিতরা। কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফেরার আর্জি জানিয়ে একটি ভিডিয়ো তাঁরা সোশ্যাল নেটওয়ার্কে পোস্ট করেছেন। কেরলের মল্লপ্পুরম জেলায় আছেন মাল ব্লকের দক্ষিণ হাঁসখালি গ্রামের বাসিন্দা সাহেবুল আলম। সঙ্গে গ্রামের আরও ১৯ যুবক। নির্মাণ শিল্পের কাজের সঙ্গে তাঁরা যুক্ত। এক মাসের বেশি সময় ধরে কোথাও কাজ হচ্ছে না। এখন হাতে টাকাও শেষ। তিনি বলেন, “মাঝে মধ্যে কিছু খাবার দেওয়া হচ্ছে। সেগুলি খেয়েই আছি। কিন্তু এ ভাবে কি বেঁচে থাকা যায়!”

একই অবস্থার মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে দিনহাটার আয়ুব আলি, ফিরদৌস আলিদের। পরিবারের সদস্যদের একটি অংশকে নিয়ে তাঁরা নয়ডায় থাকেন। তাঁদের কথায়, “সবাই শুধু আশ্বাস দেয়। কখনও একবেলার খাবার মেলে। অন্তত নিয়মিত খাবার দেওয়া হোক।” বামনহাটের দুর্গানগরের জহিরুল শেখ রয়েছেন মুম্বইয়ে এসি মার্কেটে। তিনি বলেন, “খুবই অসুবিধের মধ্যে আছি।’’

এই অসুখে সকলেই এখন বাড়ির পথ চেয়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন