International Women's Day

জীবনের লড়াইয়ে কুর্নিশ পঞ্চকন্যাকে

সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই পাঁচ জন হলেন মারুফা খাতুন, রুম্পা দাস, সনেকা মণ্ডল, রোহিলা হেমব্রম ও দেবী আচার্য।

Advertisement

জয়ন্ত সেন 

মালদহ শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২০ ০২:৫৮
Share:

সম্মানিত: (বাঁ দিক থেকে) দেবী, রোহিলা, মারুফা আর সনেকা। আগে এসে পুরস্কার নিয়ে চলে যান রুম্পা। নিজস্ব চিত্র

কেউ দু’মুঠো খাবার জোগাড়ে হকারি করেন। কেউ সংসারের হাল টানতে রাস্তার পাশে বসে কলাই ডালের রুটি বিক্রি করেন। কেউ শারীরিক প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করে চালাচ্ছেন পড়াশোনা, বা চিরাচরিত প্রথা ভেঙে আদিবাসী কন্যা বসছেন সরস্বতী পুজোয়। আবার এক রূপান্তরকামী যুক্ত সমাজসেবায়— নারী দিবসের আগে শনিবার বিকেলে মালদহের মিশন রোডে রোটারি ভবনে অনাড়ম্বর এক অনুষ্ঠানে মালদহ জেলার এমনই ‘পঞ্চকন্যা’-কে সংবর্ধনা জানাল দু’টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

Advertisement

সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই পাঁচ জন হলেন মারুফা খাতুন, রুম্পা দাস, সনেকা মণ্ডল, রোহিলা হেমব্রম ও দেবী আচার্য।

কেন তাঁদের কুর্নিশ?

Advertisement

কালিয়াচক-২ ব্লকের মোথাবাড়ির ২৪ বছরের মারুফার শারীরিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। তাঁর উচ্চতা মাত্র ২ ফুট। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে সঙ্গী করেই তিনি উচ্চমাধ্যমিক পাশের পরে ডিএলএড প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এ বছরই তিনি কালিয়াচক কলেজে ভর্তি হয়েছেন। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি সুতপা কাঞ্জিলাল বলেন, ‘‘মারুফা যে ভাবে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে তা প্রশংসনীয়।’’

রুম্পার বাড়ি ইংরেজবাজার শহরে। পরিবারের অন্নসংস্থানের ভার তাঁর উপরে। সাইকেলে করে দোকানে দোকানে হকারি করেন তিনি। সকালে মকদুমপুর বাজারে চা-ও বিক্রি করেন। এ ভাবেই দুই বোনের বিয়ে দিয়েছেন। বৃদ্ধ বাবা-মায়ের দেখাশোনা করছেন। আগলে রেখেছেন গোটা সংসার। সেই কারণেই তাঁকে সংবর্ধনা।

স্বামীর মৃত্যুর পরে ছেলেমেয়েদের নিয়ে পথে বসার জোগাড় হয়েছিল সনেকার। ঘুরে দাঁড়াতে রুটিকে ‘হাতিয়ার’ করেন। রাস্তার পাশে বসে কলাই ডালের রুটি তৈরি করে বিক্রি করেন তিনি। তাতেই চলে তাঁর সংসার।

হবিবপুরের দাল্লা চন্দ্রমোহন হাইস্কুলের ছাত্রী রোহিলা এ বার স্কুলের সরস্বতী পুজোয় পুরোহিত ছিল। আদিবাসী সমাজের মেয়ে হয়েও চিরাচরিত প্রথা ভেঙে যে ভাবে সে মন্ত্রোচ্চারণে পুজো করেছে, তাকেই সম্মান জানান হল।

এ ছাড়াও সংবর্ধনা জানানো হয় রূপান্তরকামী দেবীকে। তাঁর কথায়, ‘‘ছোট থেকেই নানা গঞ্জনা শুনতে হয়েছে। কেউ বলত লেডিস, কেউ বলত দিদি বা বৌদিও। বয়স যখন ১৪, তখন থেকেই সমকামের লড়াইয়ের অংশীদার হয়ে পড়ি। তবে এখনও লড়াই চলছেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন