দীর্ঘ দিন ধরে চলা যানজট এড়াতে ডালখোলা শহরের মধ্যে দিয়ে যাওয়া ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের বাইপাস তৈরির জন্য জমি নির্বাচন করা হয়েছিল অনেক বছর আগেই। সমস্ত জটিলতা কাটিয়ে বছর দেড়েক আগে অধিগ্রহণ করা হয়েছে সেই জমি। জমিদাতাদের ক্ষতিপূরণ-সহ সমস্ত কাজ সম্পূর্ণ হলেও এখনও শুরু হয়নি ওই চার লেন বাইপাস তৈরির কাজ। ফলে এখনও নিত্যযাত্রীরা শিকার হচ্ছেন যানজট সমস্যার।
ডালখোলার বাসিন্দাদের কাছে শহরের যানজট এখন আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শহরের ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে উঠলেই দেখা যায় সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাক। সেই যানজট কখনও একদিকে সূর্যাপুর এবং অন্যদিকে দোমহনা পর্যন্ত পৌঁছে যায়। তখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনও পথ থাকে না যাত্রীদের। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সারা দিনে ঘণ্টা দুই-তিনেকের বেশি রেল গেট খোলা থাকে না। ডালখোলা এলাকায় পণ্যবাহী ট্রেনের সামগ্রী খালাশ করার রেক পয়েন্ট রয়েছে। ফলে ওই অঞ্চলে পণ্য পরিবহণকারী ট্রাকের জন্য যানজট তৈরী হয় বলে বাসিন্দাদের দাবি। এ ছাড়াও ভুট্টার সময় রাস্তার পাশে ধর্ম কাঁটাগুলিতে ভুট্টার ওজন করানোর জন্য ট্রাক ঢোকে ও বের হয় জাতীয় সড়ক দিয়েই। ফলে সে সময়ও যানজট লেগেই থাকে।
ডালখোলার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের চার লেন বাইপাসের কাজ শুরু না হওয়ায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা।
প্রস্তাবিত ওই বাইপাসটি ডালখোলার পূর্ণিয়া মোড় থেকে শহরের রানিগঞ্জ এলাকা পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ অতিক্রম করবে। জাতীয় সড়কের উপর সেই কাজ শুরু না হওয়ায় এর আগে ডালখোলাতে ধর্মঘট করে বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন এলাকার ব্যবসায়ীরা। ডালখোলা মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পবন অগ্রবাল বলেন, ‘‘এর আগে আন্দোলন করেছিলাম। কিন্তু প্রশাসন এলাকার জাতীয় সড়ক নিয়ে কোনও ব্যবস্থাই নিতে পারেনি।’’ যানজটের ফলে ব্যবসায়ীদের দৈনন্দিন কাজে দুর্ভোগ হওয়ার অভিযোগ করেছেন তিনি। ডালখোলা বাসিন্দাদের এই সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন ডালখোলা পুরসভার চেয়ারম্যান সুভাষ গোস্বামীও। তিনি বলেন, ‘‘যানজট নিয়ে এলাকার মানুষের চরম দুর্ভোগ হচ্ছে। রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে পারছেন না বাসিন্দারা।’’
জমি অধিগ্রহণ করে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। একাধিকবার টেন্ডার ডাকা হলেও নানাবিধ সমস্যার কারণে কাজ থমকে গিয়েছে। নতুন করে ডাকা টেন্ডারে ৭৮ কোটি টাকার এই প্রকল্পের ৪৫ শতাংশ বর্ধিত করেছে ঠিকাদার সংস্থাগুলি। এতে ফের জটিলতা তৈরি হওয়ায় তাদের নিয়েও আলোচনায় বসেছে প্রশাসন।