উদাসীন: ভোট পর্ব মিটে গেলেও শিলিগুড়িতে এখনও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পতাকা ঝোলানো রয়েছে। নিজস্ব চিত্র
জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচনের আগের দিন থেকে রাজনৈতিক সংঘর্ষ অব্যাহত। ঘটনাটি জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় জমিদার পাড়া, বালাপাড়া সহ বজরা পাড়ার একাংশ। তৃণমূল ও বিজেপি দু’পক্ষের জখম কম বেশি ১৮ জন। মাথা ফাটল উপপ্রধানের। রবিবার এলাকায় পরিবেশ থমথমে। দু’পক্ষই কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও এখন কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। সংঘর্ষের জন্য বিজেপি নেতার নাতির রবিবারের জন্মদিনের অনুষ্ঠান বাতিল হয়ে গেল।
ভোটের আগের দিন বুধবার রাতে স্থানীয় তৃণমূল ও বিজেপি নেতা কর্মীদের মধ্যে প্রচারকে কেন্দ্র করে বিবাদ শুরু হয়। বিজেপির অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের পায়ের নীচে মাটি সরে যাচ্ছে বুঝেই তৃণমূল সন্ত্রাস করছে। আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন মহিলা সহ ছ’জন।’’
তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, বিজেপি নেতাকর্মীদের এলাকায় কোনও অস্তিত্ব নেই। এর জেরেই তৃণমূলের কর্মীদের উপর লাঠি, অস্ত্র, লোহার রড দিয়ে আক্রমণ চালান বিজেপি কর্মীরা। আহত হয়েছেন পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বেণুরঞ্জন সরকার সহ ১২ জন নেতাকর্মী। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় গ্রামে। এরপর থেকে দফায় দফায় দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। শনিবার গভীর রাতে ফের দু’পক্ষের গণ্ডগোলকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। বিজেপি কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠে শাসক দলের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের দাবি তাদের কর্মীদের যে ভাবে মারধর করা হয়েছে, অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এই ঘটনাকে চাপা দিতে বিজেপিকর্মীরা নিজেরাই বাড়ির কিছু জিনিস ভেঙে তৃণমূলের নাম কালিমালিপ্ত করতে চাইছেন। এলাকায় উপপ্রধান বেণুরঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘বিজেপি নেতা হারাধন সরকারের নেতৃত্বে আক্রমণ চলছে দফায় দফায়। আমার মাথা ফেটেছে। আরও অনেকে আহত হয়েছেন। অভিযোগ করলেও পুলিশ এখন কোন পদক্ষেপ করেনি।’’
এ দিকে বিজেপির এসটি, এসসি সেলের জেলা সভাপতি হারাধন সরকার বলেন, ‘‘বিজেপির এখানে কোন অস্তিত্ব নেই। আমাদের আক্রমণ করা শক্তি নেই। আমার ছেলে সিভিক ভালান্টিয়ার হলেও কোনও দল করে না। শনিবার রাতে উপপ্রধানের নেতৃত্বে পাঁচটি বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়। এরপর গ্রামের সাধারণ মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনীকে মারধর করে। থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, "রবিবার আমার নাতির জন্মদিনের অনুষ্ঠান ছিল। সেই অনুষ্ঠান বাতিল করতে হল তৃণমূলের সন্ত্রাসের জন্য।’’
এ দিন আহত বিজেপিকর্মীদের সঙ্গে দেখা করলেন বিজেপি উত্তরবঙ্গের যুগ্ন আহ্বায়ক দীপেন পারমাণিক। তিনি বলেন, ‘‘কর্মীদের পাশে রয়েছি। দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানাই।’’ কোতোয়ালি থানায় আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার বলেন, ‘‘গণ্ডগোলকে কেন্দ্র করে বিজেপি এবং তৃণমূল অভিযোগ করেছে।’’