মালদহের কালিয়াচকে তৃণমূলের সালিশিসভায় বিবাদের ঘটনায় তদন্তে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
মালদহে তৃণমূলের ডাকা সালিশিসভায় অশান্তি। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত একাধিক। অভিযোগের তির তৃণমূলের বুথ সভাপতি সামসুল শেখ-সহ কয়েক জনের দিকে। যদিও কাউকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
মালদহের কালিয়াচক থানার রাজনগর গ্রামের ঘটনা। নিহতদের নাম একরামুল শেখ (৪৫) এবং বাদশা শেখ। স্থানীয় সূত্রে খবর, ফসলি জমিতে ট্র্যাক্টর চালানো নিয়ে একরামুলের সঙ্গে সামসুলের গোলমাল হয়েছিল। বিবাদ বাড়তে থাকলে পুলিশের দ্বারস্থও হয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু পুলিশ অভিযোগ নেয়নি বলে দাবি পরিবারের। এর পর এই বিবাদের সমাধান করতে সালিশিসভার আয়োজন করেন রাজনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যের স্বামী মুক্তার শেখ। এখানেই সামসুলকে কান ধরে ওঠবস করার নিদান দেওয়া হয়েছিল, যা তিনি মেনে নিতে পারেননি।
সালিশি-সমাধান মানতে না পেরে ধারালো অস্ত্র হাতে সকলের সামনেই একরামুলের দিকে তেড়ে যান সামসুল। এলোপাথাড়ি কোপ মারেন। আশপাশে যাঁরা ছিলেন, তাঁরাও আহত হন। গুরুতর জখম অবস্থায় একরামুলকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাদশার মৃত্যু হয় চিকিৎসাধীন অবস্থায়। বাকিরা ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন। দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে মৃতের পরিবার।
মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব জানিয়েছেন, এসডিপিও ফৈসাল রাজা এবং কালিয়াচক থানার আইসি সুমন চৌধুরীর নেতৃত্বে পুলিশের বিশালবাহিনী খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিল। এলাকায় এখনও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।
তৃণমূলের ডাকা সালিশিসভার এই পরিণতিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। মালদহ জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় বলেন, ‘‘তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে পুলিশপ্রশাসন বলে কিছু নেই। পুলিশ ওদের কার্যালয় রক্ষা করতে ব্যস্ত। তাই থানার পরিবর্তে সালিশিসভা। আমরা এই ঘটনাকে ধিক্কার জানাচ্ছি।’’ জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ ঘোষ অবশ্য অভিযোগ মানতে চাননি। জানিয়েছেন, এটা নিছক পারিবারিক বিবাদের ঘটনা। রাজনীতির সঙ্গে এর কোনও যোগাযোগ নেই। তাঁর কথায়, ‘‘কোথাও কিছু হলেই বিজেপি চক্রান্ত করে তৃণমূলের নাম তার সঙ্গে জুড়ে দিচ্ছে। এটা কাম্য নয়। পুলিশ নিশ্চয় ব্যবস্থা নেবে।’’