একই মাঠে চলছে বিভিন্ন খেলার অনুশীলন। —নিজস্ব চিত্র।
তিরিশ থেকে চল্লিশ দশকে সত্য চৌধুরী, পবিত্র সেনগুপ্ত।
ষাট থেকে আশির দশকে নাসিরউদ্দিন (নিসু), আব্দুল সালেক, যোগেন চৌধুরী।
মালদহের খেলাধুলার জগতে ওই নামগুলি বহুল চর্চিত। বিভিন্ন খেলায়, জেলার বাইরেও মালদহের সুনাম বাড়িয়েছেন এঁরা। জেলা ক্রীড়া সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, অবিভক্ত ভারতে ঢাকা একাদশের নিয়মিত খেলোয়ার ছিলেন সত্যবাবু। এ ছাড়া তিনি মোহনবাগানের হয়েও ফুটবল খেলেছেন। ফুটবলের পাশাপাশি ভলিবলেও সুনাম ছিল তাঁর। সত্যবাবুর মতো পবিত্রবাবুও ভলিবল, হকি, ও ফুটবলের বিভিন্ন বড় টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন। পরে সত্যবাবু অক্রুরমণি করোনেশন স্কুলে এবং পবিত্রবাবু জেলা স্কুলে ক্রীড়া শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন।
তাঁদের পরে ফুটবল, ভলিবলের ময়দানে উঠে এসেছে ইংরেজবাজারের বক্ষাটুলির বাসিন্দা নাসিরউদ্দিন, আব্দুল সালেক, যোগেন চৌধুরীদের নাম। তাঁদের মধ্যে নাসিরউদ্দিন ওরফে নিসু বাবু একটানা ১৭ বছর ধরে খেলা চালিয়ে গিয়েছেন। ১৯৮০ সালে তাঁর হাত ধরে ইন্টার স্কুল বাংলা ফুটবল টুর্নামেন্টে মালদহ জেলা সেরা হয়েছিল। মুম্বই এ অনুষ্ঠিত রোবর্স কাপে রেলের কাটিহার ডিভিশনের হয়ে আব্দুল সালেক, যোগেন চৌধুরী খেলতে গিয়ে প্রশংসিত হয়েছিলেন।
বর্তমানে একমাত্র গাজলের বাসিন্দা ফুটবলার সুকদেব ওঁরাও মহামেডান স্পোটিং ক্লাবের খেলোয়াড়। কিন্তু বহুদিন এরকম আর কোনও নাম উঠে আসেনি মালদহের ময়দান থেকে। শুধু ফুটবল নয়, ক্রিকেট, ভলিবল, কবাডি প্রভৃতি খেলাতেও উৎসাহ কমছে।
এর জন্য জেলার খেলাধুলার পরিকাঠামোকেই দায়ী করেছেন প্রাক্তনী থেকে শুরু করে বর্তমান খেলোয়ারেরা। জেলাতে মাত্র একটি ইন্ডোর স্টেডিয়াম রয়েছে। ২০০৯ সালে ২২ ডিসেম্বর ওই স্টেডিয়াম তৈরি হয়। আরও একটি স্টেডিয়াম রয়েছে। তবে সেটি রেলের। ১৯৮২ সালে এবিএ গনি খান চৌধুরী রেলমন্ত্রী থাকাকালীন হোসেন সাহু নামে একটি ইন্ডোর স্টেডিয়াম গড়ে তুলেছেন। এই স্টেডিয়ামটি অবশ্য শুধু মাত্র রেলের কর্মীরাই ব্যবহার করতে পারেন। অন্য কেউ ব্যবহার করতে চাইলে বাড়তি ভাড়া দিতে হয়। তাই সত্য চৌধুরী ইন্ডোর স্টেডিয়ামই ভরসা সাধারণের। খেলার মাঠ বলতে জেলার ক্রীড়া সংস্থার একটি এবং জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে থাকা বৃন্দাবনী মাঠ। ওই দুটি মাঠই ব্যবহার করতে পারে খেলোয়াড়রা। মাঠের অভাবে জেলায় লিগের খেলা চালাতে সমস্যায় পড়তে হয় জেলা ক্রীড়া দফতরকে। ইন্ডোর স্টেডিয়ামের অভাবে টেবিল টেনিস, ব্যাডমিন্টনের মতো ইন্ডোর খেলাগুলির লিগ বন্ধ রয়েছে।
(চলবে)