মিলল টাকা, সঙ্গে কুড়ি ভরি সোনাও 

কুশওয়া দম্পতিকে মেরে গয়না, টাকা হাতিয়ে উত্তরবঙ্গের বাইরে পালিয়ে সংসার শুরুর পরিকল্পনা ছিল দু’জনের। পুলিশের দাবি, বুধবার সঞ্জয় জেরায় স্বীকার করেছিল, ভূমিকাকে হেনস্থা করার জন্যই অজয়কে তিনি খুন করেছেন। ঘটনার সময় অজয়ের স্ত্রী মিনাদেবী জেগে যাওয়ায় তাঁকেও মারতে হয়

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৮ ০৫:৪২
Share:

খুনের সময়ে লুঠ হওয়া লক্ষাধিক টাকা ও সোনা-রুপোর গয়নার হদিশ পেল পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে শিলিগুড়ির সেবক রোডের একটি মলের দোতলায় থাকা একটি ট্যাটু করার দোকানের পিছনের দিকে লুকিয়ে রাখা ব্যাগের হদিশ মেলে। পুলিশ সূত্রের খবর, ব্যাগ থেকে নগদ ২ লক্ষ টাকা, ২০ ভরি সোনার গয়না, লক্ষাধিক টাকার রুপোর গয়না, বাসন উদ্ধার হয়েছে। এ ছাড়াও খুনে ব্যবহার হওয়া ডাম্বেলের রডটি মিলেছে। ধৃত সঞ্জয় তামাং খুনের রাতের পরেরদিন দুপুরে পরিচিত ওই সেন্টারে গিয়ে মালপত্রের আড়ালে ব্যাগটি রেখে এসেছিল। ওই দোকানের এক কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।

Advertisement

এ দিন পুলিশ জানায়, নিহত অজয় ভূমিকাকে টানা শারীরিকভাবে হেনস্থা করছিলেন বলে অভিযোগ। সেই রাগে প্রেমিকের সঙ্গে খুনের পরিকল্পনা তৈরি করে ভূমিকা। কুশওয়া দম্পতিকে মেরে গয়না, টাকা হাতিয়ে উত্তরবঙ্গের বাইরে পালিয়ে সংসার শুরুর পরিকল্পনা ছিল দু’জনের। পুলিশের দাবি, বুধবার সঞ্জয় জেরায় স্বীকার করেছিল, ভূমিকাকে হেনস্থা করার জন্যই অজয়কে তিনি খুন করেছেন। ঘটনার সময় অজয়ের স্ত্রী মিনাদেবী জেগে যাওয়ায় তাঁকেও মারতে হয়। বুধবার গভীর রাতে অভিযুক্ত তরুণ-তরুণী টাকা, গয়না লোপাটের কথা স্বীকার করে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার ভরতলাল মিনা বলেন, ‘‘দম্পতি খুনের পিছনে ব্যক্তিগত আক্রোশের সঙ্গে টাকা, গয়না লুঠের বিষয়ও ছিল, তা স্পষ্ট।’’

Advertisement

এ দিন দুপুরে বাগডোগরা থানা থেকে সঞ্জয়কে সঙ্গে নিয়ে শিলিগুড়ির সেবক রোডে আসেন এসিপি (পশ্চিম) প্রণব শিকদার, ওসি দীপাঞ্জন দাস। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রথমে ডনবসকো স্কুল মোড়, চেকপোস্ট এলাকার কথা বললেও পরে মলের দোতলায় দোকানটি পুলিশকে চিনিয়ে দেয় সঞ্জয়। তাকে সঙ্গে নিয়ে ভিতরে গিয়ে পুলিশের দল টাকা ও সোনা রাখার ব্যাগ উদ্ধার করে। দোকানের ওই কর্মী পুলিশকে জানান, ব্যায়ামের পাশাপাশি শরীরে ট্যাটু করানোর নেশা ছিল সঞ্জয়ের। নিয়মিত সেন্টারে আসতেন তিনি। রবিবার সকালের পরেও এক দফায় এসেছিলেন। তখন তাঁর হাতে একটি ব্যাগ ছিল। পরে সেটি সেন্টারের একটি টেবিলের পিছনে রেখে চলে যান। কেউ আর তা লক্ষ্য করেনি। পরে সেন্টারের ওই কর্মীকেও পুলিশ বাগডোগরা নিয়ে যায়।

ওই দোকানের কর্মীর দাবি, অনেক পরিচিতই পাহাড়, ডুয়ার্স থেকে এসে ব্যাগ জিনিসপত্র রেখে যান। সঞ্জয়ও পরিচিত হওয়ার সুবাদে ব্যাগটি রেখে গিয়েছেন। মাঝের তিনদিন সঞ্জয় দোকানে আসেননি। কর্মীর দাবি, লোকমুখে সঞ্জয়ের গ্রেফতারির খবর শুনে ব্যাগটি পুলিশকে দেবে ঠিক করেছিলেন তিনি। পুলিশের সন্দেহ, ২১ জুলাই রাত সাড়ে ১১টায় সঞ্জয় ওই বাড়িতে ঢোকে। ভূমিকাও সঙ্গে ছিল। ব্যায়াম করার ডাম্বেল দিয়ে দম্পতিকে মাথায়, মুখে আঘাত করে খুন করে। পরে আলমারি থেকে টাকা, গয়না নিয়ে জামাইবাবুর বাড়ি যায়। পরে সেখান থেকে শিলিগুড়ি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন