২১ বছরের যুবকের দেহ পাওয়া যায় রেললাইনের ধারে। —নিজস্ব চিত্র।
বিজেপিকর্মীর পুত্রের ‘রহস্যমৃত্যু’ ঘিরে রাজনৈতিক শোরগোল কোচবিহারের মাথাভাঙায়। পরিবার এবং বিজেপির দাবি, খুন করে রেললাইনের ফেলে রেখে দেওয়া হয়েছিল ২১ বছরের প্রলয় বর্মণের দেহ।
মাথাভাঙা-২ ব্লকের পশ্চিম শিলডাঙা এলাকার বাড়ি বিজেপিকর্মী অধীর বর্মণের। তাঁর অভিযোগ, গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে মাথাভাঙা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁর পুত্র। ওই রাতেই স্থানীয় ক্লাব থেকে প্রবীণ পাল নামে এক জন তাঁকে ফোন করে জানান যে, তাঁর ছেলে বাইক নিয়ে ক্লাবের সামনে ব্যারিকেডে ধাক্কা মেরেছেন। ওই ফোন পেয়ে তিনি ক্লাবে ছুটে যান অধীর। তাঁর দাবি, সেখানে ছেলের বাইক এবং মোবাইল পেলেও ক্লাবের কয়েক জন সদস্য জানান, প্রলয়কে তাঁরা বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন। বাড়ি ফেরেন তিনি। কিন্তু ছেলেকে পাননি।
নানা জায়গায় খোঁজখবর করেও ছেলের হদিস পাননি বাবা। গভীর রাতে বাড়ি থেকে দূরে রেললাইনের ধারে ছেলের দু’টুকরো হয়ে যাওয়া দেহ দেখতে পান তিনি। পুত্রহারা বিজেপিকর্মীর অভিযোগ, গত২৭ সেপ্টেম্বর তিনি থানায় যান। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে তাঁর অভিযোগ গ্রহণ করতে প্রথমে অস্বীকার করে পুলিশ। পরে অভিযোগ জানাতে পারেন। কিন্তু অভিযোগের রিসিভিং কপি দেওয়া হয়নি। পরে জেলা পুলিশ সুপার মেল মারফত অভিযোগ করেন। এর পর গত ১ অক্টোবর তাঁকে পুনরায় একটি অভিযোগ লিখে জমা দিতে বলা হয়। কিন্তু এ বারেও একই ঘটনা। ওই বিজেপিকর্মীর অভিযোগ, পরিকল্পিত ভাবে তাঁর ছেলেকে খুন করা হয়েছ। পুলিশ কিছু চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। এ নিয়ে পুলিশের তরফে প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
শাসকদলের অভিযোগ, দুর্ঘটনায় মৃত্যুকে রাজনৈতিক ফায়দায় ব্যবহার করছে বিজেপি। তৃণমূলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায়ের মন্তব্য, ‘‘এক যুবকের মৃত্যু স্বাভাবিক ভাবে দুঃখজনক ঘটনা। যে বিজেপিকর্মী তাঁর ছেলেকে হারিয়েছেন, তিনি শোকগ্রস্ত। তিনি কী বলছেন, কী ভাবছেন সেটা জানা নেই। কিন্তু যে কোনও ঘটনা ঘটলেই, সেটা নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করছে বিজেপি। এর আগেও বেশ কিছু রাজনৈতিক ঘটনা দিয়ে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব তৈরির চেষ্টা করেছে বিজেপি। এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। পুলিশ তদন্ত করবে এবং ঘটনার সত্যতা উন্মোচন হবে। তবে এই ঘটনার সঙ্গে কোনও ভাবেই তৃণমূল যুক্ত নেই।’’