জলপাইগুড়ি বাজারে ইলিশ। ছবি: সন্দীপ পাল।
ইলিশ সরষে না ভাপা ইলিশ? জামাই এর পাতে কোনটা তুলে দেবেন, নিঃসন্দেহে সেই পরিকল্পনা ছকে ফেলেছেন শাশুড়িরা। কারণ জামাইষষ্ঠীর বাজারে ইলিশের অভাব হবে না বলে দাবি জলপাইগুড়ির মাছ ব্যবসায়ীদের। তাঁরা জানান, শনিবারই ওপার বাংলার পদ্মা ও মেঘনার ইলিশ পৌঁছে গিয়েছে জলপাইগুড়ির বাজারে। কিছু এসেছে ওড়িশা থেকেও। আজ, রবিবার জামাইষষ্ঠীর সকালে আরও ইলিশ এসে পৌঁছনোর কথা শহরে।
জলপাইগুড়ি ফিস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র বলেন, “এবার ইলিশের সমস্যা হবে না। পর্যাপ্ত মাছ বাজারে পৌঁছেছে। টাটকা ইলিশও মিলবে।” কিন্তু পর্যাপ্ত ইলিশ বাজারে পৌঁছলেও দাম আদৌ নাগালে থাকবে তো ? সে প্রশ্নে কিন্তু ব্যবসায়ীরা দোলাচলে। তাঁদের সংশয় রয়েছে দাম নিয়ে।
শনিবার শহরের বিভিন্ন বাজারে ছ’শো গ্রাম ওজনের টাটকা ইলিশ ১ হাজার টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা কেজি দামে বিক্রি হয়েছে। দরদাম করে ব্যর্থ হয়ে অনেকেই হিমঘরের ইলিশ নিয়ে গিয়েছেন। অবশ্য সেটাও দামে নেহাত কম নয়। আড়াইশো থেকে তিনশো গ্রাম ওজনের ওই ইলিশ পাঁচশো থেকে সাতশো টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী বৈদ্যনাথ সরকার দিনবাজারে দাঁড়িয়ে ঘামে ভেজা মুখ রুমালে মুছে বলেন, “উপায় নেই। একটাই তো দিন। তাই সাধ্য মতো নিয়ে নিলাম।” মাছ বিক্রেতা বিমল দাস বললেন, ‘‘চাহিদা ভাল থাকায় রবিবার দাম সামান্য হলেও বাড়তে পারে।’’ ভারত ও বাংলাদেশে ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি না থাকায় ফিস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কর্তাদের আশঙ্কা ছিল এবার জামাই ষষ্ঠীতে ইলিশ অধরা থেকে যাবে। কিন্তু গত কয়েকদিনে আকাশে জলভরা মেঘের আনাগোনা শুরু হতেই ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফোটে। তাঁরা জানান, গত সাত দিনে পেট্রাপোল সীমান্ত হয়ে হাওড়া বাজারে ভাল পরিমাণ ইলিশ এসেছে। সেখান থেকে শনিবার তা জলপাইগুড়ি পৌঁছয়।
কত পরিমাণ ইলিশ এলো জলপাইগুড়িতে? বিশ্বজিৎবাবু জানান, শনিবার ১০ কুইন্টাল মাছ ঢুকেছে। রবিবার আরও ১০ কুইন্টাল পৌঁছে যাবে। নদী থেকে তোলার পরে সরাসরি বাজারে পৌঁছেছে মাছ ব্যবসায়ীরা সেটার নাম দিয়েছেন ‘কাঁচা ইলিশ’। এ বার জামাইষষ্ঠীর বাজারে ওই ইলিশের কদর অনেক বেশি বলে জানান মাছ বিক্রেতারা।