গ্রেফতারি নেই, প্রশ্নের মুখে তদন্ত

পুলিশের দাবি, অভিযুক্তদের কেউ বাড়ি নেই। তারা কোথায় গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে তা জানতে মোবাইল টাওয়ার লোকেশনে নজরদারি করে ইতিমধ্যে একাধিক জায়গাতেও তল্লাশি করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৮ ০২:২৮
Share:

মাজিদ আনসারি।ফাইল চিত্র।

আটদিন পরেও মাজিদ আনসারির গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে করেনি। শনিবারেও জেলা পুলিশ কর্তাদের বক্তব্য ছিল, অভিযুক্তদের খোঁজে চলছে, চেষ্টা হচ্ছে।

Advertisement

পুলিশের দাবি, অভিযুক্তদের কেউ বাড়ি নেই। তারা কোথায় গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে তা জানতে মোবাইল টাওয়ার লোকেশনে নজরদারি করে ইতিমধ্যে একাধিক জায়গাতেও তল্লাশি করা হয়েছে। তাতে সাফল্য মেলেনি। পুলিশের তদন্তকারীরা হাল ছাড়েননি। শীঘ্র অভিযুক্তদের সন্ধান মিলবে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “অভিযান চলছে। দ্রুত অভিযুক্তরা ধরা পড়বে।”

যদিও পুলিশের ওই আশ্বাসে আশ্বস্ত নয় শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের একাংশই। টিএমসিপির কোচবিহার রাজ্য-সহ সভাপতি রাহুল রায় বলেন, “দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে পুলিশ সুপারের দফতরেও গিয়েছি। তাও এক সপ্তাহ হল। কিন্তু এখনও কেউ গ্রেফতার হল না।” তিনি জানান, ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের জন্য সবাই কলকাতায় আছি। রাজ্য নেতৃত্বের অনেকের সঙ্গে দেখা হয়। পুরো বিষয়টি তাদের নজরে আনা হয়েছে। কোচবিহারে ফিরে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন হবে।

Advertisement

সংগঠন সূত্রেই জানা গিয়েছে, ওই আন্দোলনের ব্যাপারে প্রাথমিক রূপরেখা তৈরি হয়েছে। ঠিক হয়েছে দ্রুত জড়িতরা ধরা না পড়লে পুলিশ সুপার, জেলাশাসকের দফতরে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। গণস্বাক্ষর করে দাবি জোরাল করা হবে।

শুক্রবার কোচবিহার কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাজিদ আনসারির ওপরে একদল যুবক হামলা চালায়। শহরের স্টেশন মোড়ের কাছে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পর তাঁকে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে। আগের থেকে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে।

কিন্তু পুলিশ এতদিনেও কেন অভিযুক্তদের একজনকে ধরতে পারেনি? তৃণমূলের অন্দরেই ওই ব্যাপারে অভিযোগ, অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত দুইপক্ষই শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের কর্মী, সমর্থক বলে পরিচিত। মাজিদ নিজেও টিএমসিপির কোচবিহার কলেজের ইউনিট কমিটির আহ্বায়ক। যে যুবকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারাও সংগঠনের কর্মী বলে পরিচিত। এমনকী, গুলির ঘটনায় শহরের বাসিন্দা এক তৃণমূল নেতা মুন্না খানের বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার অভিযোগও করেছেন জখম ছাত্রের পরিবার। মুন্না অবশ্য ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের গুঞ্জন ঘিরে বেড়েছে নানা জল্পনাও। শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের নিজেদের গোষ্ঠীকোন্দলের জের বলে অভিযোগ ওঠাতেই পুলিশের তৎপরতায় খামতি রয়েছে কি না সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। পুলিশ অবশ্য তা মানতে রাজি নয়। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, অভিযুক্তদের একজনের সোশ্যাল নেটওয়ার্কে অনলাইন থাতকার অভিযোগও খতিয়ে দেখা হয়েছে। টিএমসিপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সাবির সাহাচৌধুরী বলেন, “পুলিশ তদন্ত করছে। গোষ্ঠীকোন্দলের ব্যাপার নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন