ডেঙ্গি-আতঙ্ক: আক্রান্ত ছাত্র কার্তিক দেবশর্মা।
ডেঙ্গির সংক্রমণ চলছেই। শহর ছাড়া গ্রামের থেকেও ডেঙ্গির সংক্রমণ নিয়ে রোগী আসছে। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে রায়গঞ্জ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে কার্তিক দেবশর্মা। বাড়ি ইটাহারের উজানতোড়ে। গত রবিবার জ্বরে আক্রান্ত অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করানো হয়। বানভোলা হাই স্কুলের নবমশ্রেণির ওই ছাত্রের ডেঙ্গি হয়েছে বলে হাসপাতাল থেকে তাঁর পরিবারকে জানানো হয়েছে।
বাবা তবকবাবু বলেন, ‘‘ছেলের ডেঙ্গি হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। হাসপাতাল থেকে রক্ত পরীক্ষা করানো হয়েছিল। পরীক্ষার রিপোর্ট কী এসেছে জানতে চাইলে চিকিৎসক জানান ছেলের শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে।’’ গত মঙ্গলবার বাইরে থেকে করা পরীক্ষা রিপোর্টে দেখা গিয়েছে তার প্লেটলেট সংখ্যা কমে ১ লক্ষ ৬৪ হাজারে নেমেছে। তবে চিকিৎসক দুই বেলা রোগীদের দেখতে না-আসায় জ্বরে আক্রান্তদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পরিবারের লোকেরা। হাসপাতাল সুপার স্বাস্থ্য দফতরের কাজেই কলকাতায় রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এমন হওয়ার কথা নয়। চিকিৎসক যাতে নিয়মিত রোগীদের দেখেন তা নিশ্চয়ই দেখা হবে।’’
রায়গঞ্জ শহরে মশা মারতে ধোঁয়া ছড়ানো হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা জানান, এখনও পর্যন্ত কয়েক জনের শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে। উদ্বেগের কিছু নেই। হাসপাতালে চিকিৎসার সমস্ত ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। গ্রামাঞ্চলেও ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজ শুরু হয়েছে।
হাসপাতালে জ্বর নিয়ে ভর্তি রয়েছেন রায়গঞ্জের শ্যামপুর হাটের জব্বর আলি, পানিশালের শীতগ্রাম এলাকার কণিকা বর্মন, চণ্ডীতলা এলাকার খুশি সরকার, রেণু ঘোষ, তাহেরপুরের টুনটুনি বর্মন, ইটাহারেররিনা পরভিন, রূপযান বেওয়ার মতো অনেকেই। রায়গঞ্জ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি কুশমণ্ডির ভুল্লাগুড়ি এলাকার বাসিন্দা মনসুরা বিবির পরিবারের তরফে স্বামী ওসমান গনি জানান, দুই বার রক্ত নিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। তার পরেও কী রোগ এখনও বলেননি চিকিৎসক। রোগিণীর কী হয়েছে জিজ্ঞেস করলেও চিকিৎসক কিছু বলছেন না। জানতে চাইলে বলেন, ‘‘আপনারা রিপোর্টের কী বুঝবেন?’’ ডেঙ্গি আক্রান্ত কার্তিকের বাবা তবকবাবু বলেন, ‘‘চিকিৎসক দুই বেলা দেখে গেলে ভাল হত।’’ এদিন বেলা আড়াইটে পর্যন্ত কোনও চিকিৎসক কার্তিককে দেখতে আসেননি।’’ মহিলাদের জন্য করা জ্বরের ওয়ার্ডে ভর্তি রূপযান বেওয়ার পুত্রবধূ সপলতানা বেগমের অভিযোগ, বুধবার ভর্তির সময় বেলা ৩টায় চিকিৎসক দেখেছেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় এসেছিলেন চিকিৎসক। এদিন বেলা ৩ পর্যন্ত চিকিৎসক আসেননি।’’ বহির্বিভাগে জ্বর নিয়ে ভিড় বাড়ছে।