ভোটে বৃষ্টির পূর্বাভাসে দুশ্চিন্তার মেঘ

ভোটের প্রচারে বিক্ষিপ্ত ভাবে বাদ সেধেছিল বৃষ্টি। এবার শনিবার পুরভোটের দিনও সেই বৃষ্টির আশঙ্কায় উদ্বেগ বাড়ল প্রশাসনের। চিন্তায় পড়েছে যুযুধান রাজনৈতিক দলগুলিও। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস ২৫ এপ্রিল গোটা উত্তরবঙ্গের কোথাও হাল্কা, কোথাও মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি মৌসম পরিষেবা প্রকল্প দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরভোটের দিন উত্তর দিনাজপুর ছাড়া উত্তরের অন্য প্রায় সব জেলাতেই বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:২০
Share:

ত্রিপলে ঢাকা মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে। নিজস্ব চিত্র।

ভোটের প্রচারে বিক্ষিপ্ত ভাবে বাদ সেধেছিল বৃষ্টি। এবার শনিবার পুরভোটের দিনও সেই বৃষ্টির আশঙ্কায় উদ্বেগ বাড়ল প্রশাসনের। চিন্তায় পড়েছে যুযুধান রাজনৈতিক দলগুলিও। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস ২৫ এপ্রিল গোটা উত্তরবঙ্গের কোথাও হাল্কা, কোথাও মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি মৌসম পরিষেবা প্রকল্প দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরভোটের দিন উত্তর দিনাজপুর ছাড়া উত্তরের অন্য প্রায় সব জেলাতেই বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তারমধ্যে জলপাইগুড়িতে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ ও দার্জিলিং জেলায়। শনিবার কোচবিহার জেলায় হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৌসম প্রকল্প দফতরের নোডাল অফিসার শুভেন্দু বন্দোপাধ্যায় বলেন, “ জুনের প্রথম সপ্তাহে উত্তরবঙ্গে মৌসুমি বায়ু ঢুকে পড়বে। তখন থেকে বর্ষার মরসুম শুরু হয়ে যাবে। তার আগে এপ্রিল-মে মাস জুড়ে বিক্ষিপ্তভাবে প্রাক বর্ষার বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে। ওই নিরিখেই পুরভোটের দিন কোচবিহার সহ বিভিন্ন জেলায় হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস মিলেছে।”

Advertisement

প্রশাসন সূত্রের খবর, বৃষ্টির ওই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে বাড়তি সতর্কতামূলক বন্দোবস্ত নেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কোচবিহার, দিনহাটা, মাথাভাঙা, তুফানগঞ্জ চারটি পুরসভা এলাকার যেসব ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে বারান্দা কিংবা বৃষ্টি হলে আশ্রয় নেওয়ার মত পরিকাঠামো নেই সেখানে অস্থায়ী শেড তৈরি করা হবে। বুথের সামনে জল জমে যাতে সমস্যা না হয় সেজন্য দ্রুত জল বার করতে পাম্পও মজুত রাখা হচ্ছে। কোচবিহারের সদর মহকুমা শাসক বিকাশ সাহা বলেন, “ বৃষ্টি ও কালবৈশাখির আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যে বেশ কিছু ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সামনে শেড তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।” দিনহাটার মহকুমা শাসক কৃষ্ণাভ ঘোষ বলেন, “ দিনহাটার ৩৬টি বুথের মধ্যে ১২টিতে অস্থায়ী শেড তৈরি করা হচ্ছে। বুথের সামনে জল জমে যাতে সমস্যা না হয় সেজন্য পাম্পও মজুত রাখা হচ্ছে। কোনও ব্যাপারে আমরা ঝুঁকি নিচ্ছিনা।”

বৃষ্টির ওই পূর্বাভাসের জেরে চিন্তায় পড়েছে রাজনৈতিক দলগুলিও। প্রায় এক সুরে ডান-বাম শিবিরের কয়েকজন নেতা জানান, বৃষ্টি হলে এমনিতেই অনেকে বাড়ির বাইরে বেরোতে চাননা। তার ওপর ভোটারদের মধ্যে অসুস্থ কিংবা বয়স্করাও রয়েছেন। রোদ ঝলমল দিন না হলে তাদের অনেকেই ভোটকেন্দ্রে যেতে সমস্যায় পড়বেন। সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট দলের সমর্থকদের সবাইকে ভোটকেন্দ্রে দেখা যাবে কিনা তা নিয়ে চিন্তা থাকছেই। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য অনন্ত রায় বলেন, “ বৃষ্টি হলে বয়স্কদের সমস্যা হবে। তবু গণতন্ত্র বাঁচাতে সকলেরই নিজের ভোট নিজের দায়িত্বে দেওয়া দরকার।” বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি হেমচন্দ্র বর্মন বলেন, “ বৃষ্টি হলে অনেক প্রবীণ ও মহিলা ভোটাররা বেরোতে সমস্যায় পড়বেন। সেটা শাসকদলের শাপে বর হয়ে যাবে। ওই ভোটারদের ভোট তৃণমূল নিজেদের মত করিয়ে নিতে চাইবে এমন আশঙ্কা তো রয়েইছে। স্বাভাবিকভাবে চিন্তা বেড়েছে। তাই আমরা বৃষ্টি চাইছিনা।”

Advertisement

ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ অবশ্য বলেন, “ভোটের দিন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকলে বৃষ্টিতে তেমন কোনও সমস্যা হবেনা। ছাতা নিয়ে সবাই ভোটকেন্দ্রে যাবেন।” কোচবিহার জেলা কংগ্রেস সভাপতি শ্যামল চৌধুরীও বলেন, “ অবাধ ভোট হলে দুর্যোগ কোন সমস্যা হবেনা।” তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “ বৃষ্টি, রোদ এসব তো কারও কথার কিংবা চাওয়া-পাওয়ার ওপর নির্ভর করেনা। আমাদের দলকে যারা ভালবাসেন, সমর্থন করেন সবাই ঝড়-বৃষ্টি যাই হোক সকাল সকাল ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করবেন। বিরোধীদের ভিত্তিহীন অপপ্রচারে লাভ হবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন