ধৃত টলকেশ্বর রায়। নিজস্ব চিত্র।
তিনি কোয়ার্টারের চৌকিদার। খুনের সময়ে ঘটনাস্থলে তাঁর থাকার কথা। কিন্তু ‘ভয়ের চোটে’ চম্পট দিয়েছিলেন, ২৪ ঘণ্টা আগে পুলিশের জেরায় দাবি করেন টলকেশ্বর রায়। তার পর দিনভর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত ওই চৌকিদার পুলিশের কাছে মেনে নেন, খুনের আগে তিনিই কোয়ার্টার থেকে ডেকে বার করে এনেছিলেন লাম্বাবালা চা বাগানের ম্যানেজার গণেশ ঠাকুরকে।
এ দিন পুলিশ খুনের ঘটনায় টলকেশ্বরকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে সুবে টোপ্পো নামে আর এক ব্যক্তিকে। সাত দিনের জন্য দু’জনকে পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। পুলিশের দাবি, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আরও কয়েক জনকে পাকড়াও করা হবে এই খুনের ঘটনায়।
আগের দিন চৌকিদার দাবি করেছিলেন, কয়েক জন দুষ্কৃতী ম্যানেজারকে খুন করে। তাদের দেখে তিনি পালিয়ে যান। পুলিশ এখন বলছে, প্রাথমিক তদন্তের পরে জানা গিয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে লাম্বাবালা চা বাগানের কয়েক জন শ্রমিকই জড়িত। সম্প্রতি এই শ্রমিকদের সঙ্গে গন্ডগোল হয়েছিল গণেশের। তারই প্রতিশোধ নিতে খুন বলেই মনে করছে পুলিশ। তাদের আরও বক্তব্য, চোখের সামনে খুন হতে দেখে টলকেশ্বর কেন চিৎকার করলেন না, তা নিয়ে প্রথম ধন্ধ তৈরি হয়। দ্বিতীয়ত, পরিচিত কেউ না ডাকলে অত রাতে গণেশ কোয়ার্টার ছেড়ে বেরোতেন না। তা হলে পরিচিত কে তাঁকে ডেকেছিল? সেই খোঁজ করতে গিয়েই টলকেশ্বরের প্রতি সন্দেহ গভীর হয়।
জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘খুনের ঘটনায় আরও এক-দু’জন জড়িয়ে রয়েছে বলে মনে হচ্ছে৷ ধৃতদের জেরা করেই তাদের খোঁজ পাওয়া যাবে।’’ ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে, গণেশকে ১৬ বার কোপ মারা হয়। খুনের পরে রক্ত মুছতে নিকটবর্তী তালমা নদীতে স্নান করে দুষ্কৃতীরা। ভোরের আলো ফোটার আগে যে যার বাড়ি ফিরে যায়। তদন্তকারীদের আরও দাবি, খুনের সঙ্গে পাঁচ-সাত জন জড়িত রয়েছে।