কার্শিয়াঙে খুলছে স্কুল, দোকানপাট

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে বারোটা। কার্শিয়াং স্টেশনে দাঁড়িয়ে মনেই হবে না বন্‌ধ চলছে। স্টেশন থেকে চড়াই রাস্তার দু’পাশে সারি দিয়ে দোকানের অধিকাংশই খোলা। এতদিন দোকানের শাটার অর্ধেক তুলে অথবা টোকা দিলে দরজার পাল্লা খুলত কার্শিয়াঙে।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

কার্শিয়াং শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৫২
Share:

ছন্দে: কার্শিয়াঙে খুলেছে দোকানপাট। নিজস্ব চিত্র।

এ যেন এক অন্য মিছিল। চড়াই রাস্তা ধরে সারিবদ্ধ ভাবে উঠে আসছে পড়ুয়াদের দল। পিঠে ব্যাগ, রঙিন পোশাকে। পাকদণ্ডী রাস্তায় কেউ হাঁটবে ৪ কিলোমিটার, কেউ দশেরও বেশি। কারও সঙ্গে অভিভাবক রয়েছে, কেউ একা। স্কুল ছুটির পরে বাড়ির দিকে রাস্তার এক পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া পড়ুয়াদের লাইন এগোলো মিছিলের মতোই। তিন মাস পরে এ দিনই শাটার উঠেছে একটি বই-খাতার দোকানের। সেখানেও পড়ুয়াদের ভিড়। দোকানের প্রবীণ মালিক বললেন, ‘‘পড়াশোনার জন্য কত পথ হাঁটতে হবে এই ছাত্র-ছাত্রীদের। প্রতিদিন মিছিল দেখে অভ্যেস হয়ে গিয়েছে। পড়ুয়াদের লাইন দিয়ে হেঁটে যাওয়া দেখে মনে হচ্ছে ওরাও যেন মিছিল করছে।’’

Advertisement

তিন মাস পরে সদ্য স্কুল খুললেও পুলকার বা স্কুল বাস চলছে না। হেঁটেই যাতায়াত করতে হবে। স্কুল থেকে জানানো হয়েছে, বনধপন্থীদের রোষের হাত থেকে বাঁচতে ইউনিফর্মের পরিবর্তে সাধারণ রঙিন পোশাক পরে আসতে। এত কিছুতেও বাড়ি বসে থাকতে রাজি নয় পড়ুয়ারা। টিন এন রোড ধরে হাঁটতে থাকা এক নবম শ্রেণির ছাত্রী বললেন, ‘‘স্কুলে না গেলে সিলেবাস শেষ করতে পারব না। গাড়ি না চললে হেঁটেই যাতায়াত করতে হবে।’’

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে বারোটা। কার্শিয়াং স্টেশনে দাঁড়িয়ে মনেই হবে না বন্‌ধ চলছে। স্টেশন থেকে চড়াই রাস্তার দু’পাশে সারি দিয়ে দোকানের অধিকাংশই খোলা। এতদিন দোকানের শাটার অর্ধেক তুলে অথবা টোকা দিলে দরজার পাল্লা খুলত কার্শিয়াঙে। এ দিন দেখা গেল দোকানের দরজা হাট করে খোলা। দোকানের বয়স্ক মালিক বললেন, ‘‘স্কুল খুলে গিয়েছে। গাড়িও যাতায়াত হচ্ছে। সবই ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে।’’ ওই দোকানের উল্টো দিকের একটি পুরনো মিষ্টির দোকান। দরজা খোলা থাকলেও শোকেস খালি। দোকানের এক কর্মী বললেন, ‘‘তিন মাসের জমা ধুলো সাফ করার পর্ব চলছে। কাল থেকে মিষ্টি বানানোও শুরু হবে।’’ দুপুর গড়াতেই তোড়ে বৃষ্টি নামে কার্শিয়াঙে। ট্যুরিস্ট লজের সামনে জড়ো হতে থাকে মহিলা মোর্চার সমর্থকরা। বদলাতে থাকে শহরের ছবিও। পুলিশ প্রথমে মিছিল আটকে দিলেও পরে মহিলা সমর্থকদের অনুরোধে পুলিশ মাত্র দেড়শো মিটার রাস্তায় স্লোগান ছাড়া মিছিলের অনুমতি দেয়। তাতেই রাজি হয়ে যায় সমর্থকরা। চলে আসেন দার্জিলিঙের ডিআইজি হুমায়ুন কবির। জড়ো হওয়া মহিলা সমর্থকদের দিয়ে বলিয়ে নেন আজ শুক্রবার থেকে কোনও মিছিল হবে না। পুলিশ হাত মাইকে শহর জুড়ে ঘোষণা করে জানিয়ে দেয়, আজ শুক্রবার থেকে মিছিলের অনুমতি দেওয়া হবে না।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন