ক্ষোভ: শিলিগুড়ি বিধান মার্কেটে মন্ত্রী গৌতম দেব।
কিছু দিন আগে বিধান মার্কেটে পুড়ে গিয়েছিল কয়েকটি দোকান। সেই জায়গায় অবৈধভাবে কার্যত একটি ছোট মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই অভিযোগ কানে গিয়েছে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবেরও। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শনিবার সকালে বিধান মার্কেট পরিদর্শনে যান তিনি। গাড়ি থেকে নেমেই চক্ষু চড়কগাছ মন্ত্রীর। মেজাজ হারিয়ে চিৎকার করে তিনি বলেন, ‘‘৭টা দোকানের জায়গায় ২০টা দোকান তৈরি করেছে! এরা দোকান বানিয়ে কোটি কোটি টাকা কামাবে আর আমরা মানুষের কাছে গালি খাব? আমরা কি বসে বসে দেখব? কিছু লোক শহরটাকে বেচে দিচ্ছে। জেসেবি লাগিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিন। ‘ওপেন’ বলে যাচ্ছি, আমি নিজে দাড়িয়ে থাকব। দেখব কে বাধা দেয়।’’ মন্ত্রীর মেজাজ দেখে সেই সময় কোনও ব্যবসায়ী তাঁর ধারেকাছে ঘেঁষেননি। তবে মন্ত্রী চলে যেতেই বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন।
দলের নেতারাও বলছেন, ভোটের ফল প্রকাশের পর অনেকটাই সংযত হয়েছেন গৌতম দেব। তবে এ দিন মন্ত্রীর মেজাজ দেখে হকচকিয়ে যান ঘটনাস্থলে উপস্থিত দলের কাউন্সিলার নান্টু পালও। মন্ত্রী বলেন, ‘‘এদের সঙ্গে (কিছু ব্যবসায়ী) ভদ্রতা করতে যাওয়াই আমার ভুল হয়েছে। সব কিছুর একটা মাত্রা আছে।’’ শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এসজেডিএ) নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বিধান মার্কেট। তাদের নজরদারি থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে অবৈধ নির্মাণ হল, তার কৈফিয়ৎ চেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সংস্থার এক আধিকারিককে নাগাড়ে ধমকে যান মন্ত্রী। বলেন, ‘‘পার্কিয়ের জায়গা, জলের জায়গা উড়িয়ে দিল, বিশাল ছাদ বানাল, আপনারা কী করছেন? কে পয়সা দিচ্ছে? আপনারা দিয়েছেন?’’ কাঁচুমাচু হয়ে সেই আধিকারিক উত্তর দেন, ‘‘আমরা দিইনি স্যার।’’ ফের ধমকে মন্ত্রী বলেন, ‘‘৩-৪ কোটি টাকায় দোকান বিক্রি করবে। এখানে এক ইঞ্চি জায়গার দাম কত? নোটিস দিন আর সব গুঁড়িয়ে দিন। আমি পুলিশকে বলে দিচ্ছি। যে বাধা দিতে আসবে, গ্রেফতার হবে।’’
মন্ত্রী চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরে ‘বিধান মার্কেট বাঁচাও কমিটি’র ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল করেন ব্যবসায়ীরা। মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন বিধান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বাপি সাহা। তিনি বলেন, ‘‘মন্ত্রী কোটি কোটি টাকা তোলার যে অভিযোগ তুলেছেন, সেটার প্রমাণ দিতে না পারলে আমরা ওঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করব। কোনও দোকান ভাঙা হবে না।’’ কিছুক্ষণ বিধান রোড অবরোধও করেন ব্যবসায়ীরা। যদিও গৌতম বলেন, ‘‘আমি বেঁচে থাকতে নির্মাণ করতে দেব না। আমার লাশের উপর দিয়ে করতে হবে।’’
দীর্ঘ ক্ষণ পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান ব্যবসায়ীরা। ছবি: স্বরূপ সরকার