প্রতীকী ছবি।
শহর লাগোয়া মহানন্দা অভয়ারণ্যের জঙ্গল থেকে উদ্ধার হল একটি কঙ্কাল। তা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায়। সোমবার ভক্তিনগর থানার ৩১নম্বর জাতীয় সড়কের সাত মাইল এলাকার ঘটনা।
পুলিশ সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি থেকে সেবক যাওয়ার জাতীয় সড়কের পাশে জঙ্গলের ঝোপে কঙ্কালটি পড়েছিল। জনবসতিশূন্য জঙ্গল এলাকায় মাঝেমধ্যে লাগোয়া গ্রামগুলোর মহিলা ও পুরুষেরা কাঠ কুড়োতে যান। তাঁদেরই কয়েকজন কঙ্কাল পড়ে থাকতে দেখে বনকর্মীদের জানান। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। মঙ্গলবার উদ্ধার করা কঙ্কাল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ফরেন্সিক বিভাগে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, কঙ্কালটি একজন পূর্ণ বয়স্ক পুরুষের। ঘটনাস্থলে একটি জামা এবং প্যান্টও পুলিশ পেয়েছে। পুলিশের অনুমান, কঙ্কালটি কোনও ভবঘুরের হয়ে থাকতে পারে। উদ্ধার হওয়া জামাকাপড় নোংরা ছিল। পাশাপাশি প্যাকেট ও বস্তা দেখে তা ভবঘুরের বলে মনে করছে পুলিশ। বিট অফিস এবং রেঞ্জ অফিস এলাকার বাসিন্দারা জানান, কয়েকজন ভবঘুরেকে প্রায়শই জঙ্গলের রাস্তায় হেঁটে সেবকের দিকে যেতে দেখা যায়। সেখানে হোটেলগুলোতে গিয়ে তাঁরা খাবার চেয়ে খান। আবার কয়েকদিন পরে ফিরেও আসেন। আপাতত ভক্তিনগর থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি (পূর্ব) গৌরব লাল বলেন, ‘‘আমরা সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখছি।’’
শিলিগুড়ি থেকে সেবক যাওয়ার রাস্তায় শালুগাড়ার পরে সেনা ছাউনি, কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়, বিট অফিস এবং বেঙ্গল সাফারি পার্ক রয়েছে। তারপরেই জাতীয় সড়কের দুই পাশে মহানন্দার অভয়ারণ্যের জঙ্গল। প্রায় ৪ কিলোমিটার সড়কের দু’ধার জুড়ে রয়েছে জঙ্গল। সাফারি পার্কের পিছনের দিকে একমাত্র তুরিবাড়ি গ্রাম রয়েছে। এরপরে সেবকের আগে পর্যন্ত জনবসতি নেই বললেই চলে। এমন একটা এলাকায় কেউ মারা যাওয়ার পরে কঙ্কাল হয়ে যাওয়া নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে।
তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, এক পূর্ণ বয়স্ক মানুষের মৃত্যুর পর দেহ খোলা পরিবেশে পড়ে থাকলে তা সাতদিনের মধ্যে পুরোপুরি পচে যায়। আর তা কঙ্কালে পরিণত হয়ে কমবেশি তিন মাস সময় লাগে। কাঠকুড়োতে আসা মহিলা, পুরষেরা দাবি করেছেন, একজন ভবঘুরে পুরুষকে বেশ কিছুদিন ধরে দেখা যাচ্ছে না। ওই ব্যক্তি মাঝেমধ্যে জঙ্গলের ধারে বসে থাকত বলে তাঁদের দাবি। কোনও রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পরে হয়ত তিনি জঙ্গল, ঝোপে পড়েছিলেন। কুকুর বা কোনও বন্যজন্তুর দেহ খুবলে খাওয়ার সম্ভবনাও রয়েছে। জঙ্গলের ওই এলাকা দিয়ে সচরাচর কেউ ঢোকে না। তাই কারও নজরে দেহটি পড়েনি এই সম্ভাবনার কথাও ভাবা হচ্ছে।