দায়িত্বে: মহিলা থানার ওসি হওয়ার পরে সোনম। নিজস্ব চিত্র
দায়িত্ব নেওয়ার পাঁচ মাসের মাথায় সরিয়ে দেওয়া হল কোচবিহারের টাউনবাবু সোনম মাহেশ্বরীকে। বৃহস্পতিবার উদ্বোধন হয় দিনহাটা মহিলা থানার। এখানকার ওসি হিসেবে দায়িত্ব নিলেন তিনি। জেলা পুলিশের কর্তারা অবশ্য জানিয়েছেন, গুরুত্ব দিয়েই মহিলা থানার ওসির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁকে। তবে পুলিশেরই আরেকটি গোষ্ঠী দাবি করেছে, টাউনবাবু হিসেবে কোচবিহারে সোনম মাহেশ্বরীকে পছন্দ ছিল না একটি গোষ্ঠীর। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁকে বদলি করতে উঠে পড়ে লেগেছিলেন তাঁরা। এ বারে তা সফল হয়েছে।
কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল অবশ্য সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “দায়িত্ব দিয়েই ওই অফিসারকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।” দায়িত্ব নেওয়ার পরে ওসি সোনম মাহেশ্বরী অবশ্য ওই বিষয়ে কিছু বলতে চাননি। ‘টাউনবাবু’ থেকে ওসি হিসেবে বদলি করায় শাসক দলের ভূমিকা থাকার কথাও উড়িয়ে দেন। তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সহ সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, “কে কোথায় বদলি হবে, কাকে কোথায় দায়িত্ব দেওয়া হবে সেটা দফতরের ব্যাপার। এই বিষয়ের শাসক দল নাক গলায় না। ভিত্তিহীন অভিযোগ।”
পুলিশ সূত্রের খবর, চলতি বছরের ৩০ জুন কোচবিহারে টাউনবাবু হিসেবে দায়িত্ব নেন সোনম। তার আগে তিনি মাথাভাঙা ও মেখলিগঞ্জ থানাতে ছিলেন। সব জায়গাতেই তাঁর কাজ নিয়ে খুশি ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সে জন্যেই কোচবিহার শহরে টাউনবাবুর মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি পদে দেওয়া হয়। ওই দায়িত্ব পাওয়ার পরেই তিনি শাসক দলের গোষ্ঠীকোন্দলের মধ্যে পড়ে যান বলে অভিযোগ। মা ভবানী চৌপথী এলাকায় এক তৃণমূল নেতার উপর হামলার অভিযোগ থেকে শুরু করে স্টেশন মোড়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনাতে তাঁর ভূমিকা নিয়ে এক গোষ্ঠী ক্ষুব্ধ হয় বলে দাবি। শুধু তাই নয়, তৃণমূল জেলা পার্টি অফিসের সামনে একটি শপিং মলের জেনারেটর বন্ধ করা নিয়েও এক তৃণমূল নেতার রোষে পড়েন বলে অভিযোগ।
পরপর এ সব ঘটনাতেই টাউনবাবু থেকে তাঁকে বদলি করা দেওয়ার চাপ তৈরি হয় বলে দাবি। সোশ্যাল নেটওয়ার্কেও সোনম মাহেশ্বরীর বদলি নিয়ে সরব হন অনেকে। তাঁদের বক্তব্য, “নিরপেক্ষতার সঙ্গেই কাজ করছিলেন ওই অফিসার। তাই তাঁকে বদলি করা হল।” কোচবিহারের নতুন টাউনবাবু হিসেবে কারও নাম এখনও ঘোষণা করা হয়নি।