ষষ্ঠীতে কদর জামাই চমচমের

জ্যৈষ্ঠের চড়া রোদে মিষ্টির সঙ্গে আম নিয়ে গেলে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা নাকি খুশি হন বলে মনে করেন অনেকেই। আবার জামাইয়ের পাতে আম কেটে দেওয়া শাশুড়িদেরও অন্যতম পছন্দ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৭ ১৪:০০
Share:

জামাই-চমচম: ষষ্ঠীতে বিক্রি বাড়ছে এই মিষ্টির। নিজস্ব চিত্র

আমের বাজার আম জনতার নাগালের বাইরে। মিষ্টির দোকানে ভোর থেকে কাড়াকাড়ি। ইলিশ এসেছে মায়ানমার থেকে। কৃষ্ণনগর থেকে কারিগর এসে চেরিফল, কাঠবাদাম দিয়ে তৈরি হয়েছে ‘জামাই চমচম’। জামাইষষ্ঠীর বাজারের এমনই নানা কাহিনি শোনা যাচ্ছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন শহর-জনপদে।

Advertisement

জ্যৈষ্ঠের চড়া রোদে মিষ্টির সঙ্গে আম নিয়ে গেলে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা নাকি খুশি হন বলে মনে করেন অনেকেই। আবার জামাইয়ের পাতে আম কেটে দেওয়া শাশুড়িদেরও অন্যতম পছন্দ। তবে এ বার আমের বাজার বেশ চড়া। আমের জেলা মালদহেই আগুন দাম। গোপাল ভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়ার দাম বেড়েই চলেছে। জেলার সুস্বাদু গোপালভোগ আম ৫০ টাকা কেজি দরে বিকোচ্ছে এ দিন। দামের দিকে থেকে পিছিয়ে নেই হিমসাগর, ল্যাংড়া ও লক্ষ্মণভোগ আম। হিমসাগর ৪৫ টাকা, ল্যাংড়া ৪৪ টাকা এবং এমনকী লক্ষ্মণভোগও ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে ব্যাগ ভরে নয়, মাত্র এক কেজি আম কিনেই বাড়ি ফিরতে হল বলে জানালেন শহরের বাসিন্দা মমতা দাস। তিনি বলেন, ‘‘জামাই ষষ্ঠীতে বাড়িতে ডালি ডালি আম মজুত থাকত। দামের জন্য এখন ঘরে একটিও আম নেই।’’

জামাইষষ্ঠীতে মাছের দর বরাবরই আকাশছোঁয়া। এবারও শিলিগুড়িতে মায়ানমার থেকে ইলিশ ঢুকেছে। সঙ্গে রয়েছে ভেটকিও। শুধু হোটেল রেস্তোরাঁ নয়, মধ্যবিত্তের হেঁসেলেও ঢুকছে ভেটকি।

Advertisement

শিলিগুড়ির পাইকারি মাছ ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক বাপি চৌধুরী বলেন, ‘‘ইলিশ বরাবরই প্রথম পছন্দ ক্রেতাদের। তবে এ বার বাজারে ভেটকিও ঢুকেছে। ক্রেতাদের আগ্রহের কথা ভেবেই ভেটকি আনা হয়েছে। দেখা যাক, কেমন বিক্রি হয়।’’

গত বছর ‘জামাইগোল্লা’ চমকে দিয়েছিল কোচবিহারের বাসিন্দাদের। এ বারে চমক ‘জামাই চমচম’। সাধারণ রসে ডোবানো চমচমের তুলনায় আকারে খানিকটা বড়। তবে রসে ডোবানো নয়, খানিকটা শুকনো মিষ্টির মতো।

ব্যবসায়ীদের দাবি, ক্ষীর, ছানা তৈরি ওই চমচম। উপরে পেস্তা, কিসমিস, চেরিফল, কাঠবাদামের টুকরো ছড়ান। এক একটির দাম ২৫ টাকা। ওই ব্যবসায়ী গণেশ মোদক বলেন, “কৃষ্ণনগর থেকে কারিগর এনে জামাই চমচম তৈরি করেছি। ভাল বিক্রি হচ্ছে।”

দোকান খোলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জলপাইগুড়ির কদমতলার একটি মিষ্টির দোকানের ‘কালাকাঁদ’ ফুরিয়ে যায় বলে শহরে প্রচলিত। কড়া পাকের এই মিষ্টির জন্য আগাম দিতেও আগ্রহী কয়েকজনকে দেখা গেল। মিষ্টি ব্যবসায়ী রাজা পাল বলেন, ‘‘আগাম দিতে চেয়েছিল অনেকে। কেউ কেউ আবার শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য মাটির হাঁড়িতে মিষ্টি চাইছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন