প্রতি বছরই জেলায় বাড়ছে উচ্চ মাধ্যমিকের পাশের হার। কিন্তু পাশ করার আনন্দ মিলিয়ে যাচ্ছে কয়েকদিনেই। কারণ উচ্চ মাধ্যমিকের পরে উচ্চ শিক্ষার জন্য কলেজে ভর্তি হতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে মালদহ জেলার পড়ুয়াদের। একই সমস্যায় পড়ছে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পড়ুয়ারাও। পড়ুয়াদের চাপ সামলাতে জেলার মালদহ জেলার বিভিন্ন ব্লকে একাধিক কলেজ করার দাবি তুলেছেন ছাত্র-ছাত্রী থেকে অভিভাবক সকলেই।
গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একমাত্র মালদহ জেলাতেই রয়েছে একটি মাত্র মহিলা কলেজ। আরও মহিলা কলেজের দাবি থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে কলেজ তৈরি নিয়ে কোনও দাবি জানানো হয়নি বলে জানান উপাচার্য গোপাল মিশ্র। তিনি বলেন, ‘‘মালদহে একটি মহিলা কলেজ-সহ আরও পাঁচটি ডিগ্রি কলেজের প্রয়োজন রয়েছে।’’ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কলেজ তৈরির জন্য বিতর্কহীন পাঁচ একর জমি সংগ্রহ করতে হয়। তারপরে ২৫ লক্ষ টাকার ফান্ড তৈরি করে স্থানীয় একটি কমিটি তৈরি করতে হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে প্রস্তাব পাঠাতে হয় বলে জানান উপাচার্য গোপালচন্দ্র মিশ্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে প্রস্তাব এলে উচ্চ শিক্ষা দফতরে তা পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।
জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার মালদহে উচ্চ মাধ্যমিকে পাশ করেছেন ৭৯.৭৬ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী। যেখানে বিগত বছরে জেলায় পাশের হার ছিল ৭৭ শতাংশ। এই জেলায় মোট ১৯৮টি উচ্চ মাধ্যমিক ও ৮১টি হাই মাদ্রাসা রয়েছে। সেই জায়গায় গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মালদহ-সহ উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে মোট ২২টি কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে মালদহে রয়েছে ১১টি কলেজ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর তিন জেলার সব কলেজ মিলিয়ে মোট পড়ুয়া রয়েছেন ১ লক্ষ ৫৫ হাজার। চলতি বছরে জেলার প্রতিটি কলেজে ভর্তির জন্য পড়ুয়াদের আবেদন জমা পড়েছে গড়ে প্রায় ছ’হাজার। যদিও কলেজগুলির পরিকাঠামো অনুযায়ী মাত্র দু’হাজার ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন। এর ফলে বহু ছাত্র-ছাত্রী উচ্চ শিক্ষার জন্য স্নাতক স্তরে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে বিপাকে পড়ছেন।
মালদহের কালিয়াচক, মোথাবাড়ি, চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুর ও হবিবপুরে একটি করে কলেজের প্রয়োজন রয়েছে। মোথাবাড়ির বিধায়ক কংগ্রেসের সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘‘মোথাবাড়িতে কলেজের দাবিতে আমি একাধিকবার বিধানসভায় সরব হয়েছি। তবে কোনও কাজ হয়নি।’’ এখনকার রাজ্য সরকার শুধু প্রতিশ্রতি দিচ্ছে কিন্তু বাস্তবে কোনও কাজই হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন তিনি। একই সুরে সুর মিলিয়েছেন হবিবপুরের বিধায়ক সিপিএমের খগেন মুর্মুও। তিনি বলেন, ‘‘এখনকার রাজ্য সরকারের আমলে জেলায় শুধুমাত্র মানিকচকেই কলেজ হয়েছে।’’ অন্য ব্লকে কলেজের দাবি থাকলেও রাজ্য সরকার কোনও উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি। চলতি বিধানসভাতেও কলেজের দাবিতে তিনি সরব হবেন বলে জানিয়েছেন। যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনের দাবি, জেলার বিধায়কেরা সাধারণ মানুষ ও সংবাদ মাধ্যমের সামনে কলেজের দাবি জানান। বাস্তবে নিয়মানুযায়ী সেই দাবি তাঁরা জানান না বলে অভিযোগ করেন তিনি।