খুশি: ছট পুজোর উপকরণ কিনতে ব্যস্ত খুদে। মঙ্গলবার জলপাইগুড়িতে। ছবি: সন্দীপ পাল
ছটপুজোর মুখে গ্রিন ট্রাইবুনালের নির্দেশে শিলিগুড়ির মহানন্দা নদী ঘাট-সহ এলাকার পরিস্থিতি ভিডিও ও স্টিল ফটোগ্রাফি করা শুরু করল মহকুমা প্রশাসন।
মঙ্গলবার থেকে প্রশাসনের নিযুক্ত ক্যামেরাপার্সনদের দল লালমোহন মৌলিক, সন্তোষীনগর-সহ বিভিন্ন ঘাটে যান। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত মার্চ মাসে ট্রাইবুনাল নির্দেশ দিয়েছে বলেছে, মহানন্দা নদীর ভিতরে কোনওভাবেই বালির বস্তা ফেলা যাবে না। তেমনিই, বাঁশ দিয়ে কোনও অস্থায়ী সেতু বা কাঠামো তৈরি হবে না। নদীকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রেখে দূষণ যাতে না ছড়ায়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। উল্লেখ্য, উত্তর ভারতে বিহারের পটনার পরেই শিলিগুড়িতে সবচেয়ে বড় ছটপুজো হয় বলে পূণ্যার্থীদের দাবি।
শিলিগুড়ির মহকুমা শাসক সিরাজ দানেশ্বর বলেন, ‘‘শহরের ছটপুজো অত্যন্ত ভালভাবে পালিত হবে। ঘাট নিয়ে সমস্যা মিটে গিয়েছে। নদীর পরিস্থিতি কী থাকছে তা আদালতের নির্দেশে ভিডিও ও ছবি তুলে রাখা হচ্ছে। ট্রাইবুনাল চাইলেও আমরা তা জমা দিয়ে দেব।’’
পুলিশ-প্রশাসন সূত্রের খবর, গত এক মাস ধরে শিলিগুড়িতে ছটপুজোর ঘাট নিয়ে সমস্যা শুরু হয়। নদীর ভিতর পুজো করার ক্ষেত্রে সমস্যা না থাকলেও এতদিন যাঁরা নদীর ভিতরে ঘাট বানাতেন তাঁরা কোথায় যাবেন সেই প্রশ্ন ওঠে। যাঁরা নদীর পারে পুজো করেন, তাঁদের সঙ্গে গোলমালের আশঙ্কা দেখা যায়। ক্ষোভ বিক্ষোভ ছড়াতে থাকে। একদল বাসিন্দা নদীতে নেমে ঘাট তৈরির চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ। পুলিশ বাধা দিতে গত সপ্তাহে মহানন্দা সেতু লাগোয়া মোড় অবরোধ হয়। সরকারি অফিসারদের পাশাপাশি মন্ত্রী গৌতম দেবের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি পাল্টায়। নদীর পারে পুরানোদের সঙ্গে নতুনদেরও বসিয়ে পুজোর ব্যবস্থা করা হয়। তবে ভোর থেকে পুলিশ মোতায়েন থাকছে।
এদিনও সকাল থেকে বাসিন্দাদের মধ্যে ঘাট বিতরণ হয়েছে। মন্ত্রী গৌতমবাবু সকালে মহানন্দার সন্তোষীনগর ঘাটে গিয়ে পরিকাঠামো তৈরির কাজ খতিয়ে দেখেন। তবে নদীর ধারে জায়গা না পেয়ে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের গাঁধী ময়দান, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হনুমান মন্দিরের মাঠে মাটি খুঁড়ে অস্থায়ী পুকুর তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। পুজোর পর পুকুরগুলি যাতে বন্ধ করা হয় তা দেখা হবে বলে জানিয়েছেন মহকুমা শাসক। তিনি জানান, পুজোর পর আমরা ২৮ অক্টোবর থেকে নদীর ঘাট ও লাগোয়া এলাকায় পরিষ্কারের কাজে নামব। অস্থায়ী পুকুরগুলোয় জল জমে মশার লার্ভার জন্ম হতে পারে, সেদিকে সর্তক থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শহরে ছটপুজো প্রতিবছরের মত নির্বিঘ্নে হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন জেলা সিপিএমের সম্পাদক জীবেশ সরকারও। তিনি জানান, ঘাটের সমস্যা, নদীর সমস্যা প্রশাসনকেই দেখতে হবে। সারা বছরও নদীকে পরিস্কার রাখতে হবে। তবে ছটপুজোকে ঘিরে ১৫০ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ ১০৭ ধারায় (মুচলেকা দিয়ে ভবিষ্যতে গোলমাল না করার অঙ্গীকার) মামলা করেছে। সেগুলি প্রত্যাহার করা দরকার।