বালুরঘাটের মেয়ের অপমৃত্যু ঘিরে রহস্য

মিলল সুইসাইড নোট

বালুরঘাট আইটিআই কলেজে হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের ছাত্রী পূর্ণিমা দেবনাথের ঝুলন্ত দেহ রবিবার দুপুরে উদ্ধার হয়েছিল কলকাতার সার্ভে পার্ক এলাকার একটি অভিজাত ক্লাবের স্টাফ কোয়ার্টার্স থেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:০৮
Share:

পূর্ণিমা দেবনাথ

বালুরঘাট আইটিআই কলেজে হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের ছাত্রী পূর্ণিমা দেবনাথের ঝুলন্ত দেহ রবিবার দুপুরে উদ্ধার হয়েছিল কলকাতার সার্ভে পার্ক এলাকার একটি অভিজাত ক্লাবের স্টাফ কোয়ার্টার্স থেকে। কোর্সের অঙ্গ হিসেবে পূর্ণিমা সার্ভে পার্ক এলাকার ওই ক্লাবে শিক্ষানবিশি করছিল। আর এ দিনই পুলিশ ওই কিশোরীর ডায়েরিতে সুইসাইড নোট পায়। পুলিশের দাবি, তাতে লেখা ছিল, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’। আর সেটা দেখার পরে পূর্ণিমার বাড়ির লোকজন কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলেন না।

Advertisement

ঘটনার পর দিন, সোমবার পূর্ণিমার মা তনিশা দেবনাথ ক্লাবের এক কর্মীর দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন। কিন্তু এ দিন কলকাতায় মেয়ের দেহ নিতে এসে পূর্ণিমার বাবা প্রকাশ দেবনাথ বলেন, ‘‘আমার মেয়েই যখন ওর মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করেনি, তখন আমরা কার বিরুদ্ধে অভিযোগ করব? আমরা মেয়ের দু’-এক জন বন্ধুর কথা কানাঘুষোয় শুনেছি ঠিকই, কিন্তু তাদের আমরা চিনি না।’’

বস্তুত, পূর্ণিমার মতো পড়াশোনায় একাগ্র মেয়ে আত্মহত্যা করবে, সেটা এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না বালুরঘাটের ফরিদপুর গ্রামের বাসিন্দাদের। প্রকাশবাবুর কথায়, ‘‘পুলিশ আমাদের বলেছে, ময়না-তদন্ত করে আত্মহত্যার কথাই জানা গিয়েছে। একটা কাগজে লেখাও আমাকে দেখানো হয়। সেখানে ওর মৃত্যুর জন্য আমার মেয়ে কাউকে দায়ী করে যায়নি। কী থেকে যে কী হয়ে গেল!’’

Advertisement

প্রকাশবাবু পেশায় দিনমজুর। মৃতার পরিজনদের একাংশ জানাচ্ছেন, মামলার খরচ চালানোর সামর্থ্য তাঁদের নেই, সেই জন্যও তাঁরা অভিযোগ দায়ের করা থেকে বিরত থেকেছেন।

কিন্তু পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন? এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, ‘‘মৃত কিশোরীর কিছু সম্পর্ক নিয়ে টানাপড়েনের কথা জানা গিয়েছে। তবে তাকে আত্মহত্যায় কেউ প্ররোচনা দিয়েছে, এমন প্রমাণ মেলেনি। তাই কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশ্ন নেই।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, অভিমানেই পূর্ণিমা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলে আত্মঘাতী হয়েছে।

এ দিন পূর্ণিমার দেহ নিতে বালুরঘাট থেকে কলকাতা পৌঁছন তার বাড়ির লোকজন। পূর্ণিমার বাবা প্রকাশবাবু ছাড়াও ছিলেন তিন আত্মীয়। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পূর্ণিমার দেহের ময়না-তদন্ত করা হয়েছিল। এ দিন ওই হাসপাতাল থেকে পূর্ণিমার দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় তার বাড়ির লোকেরা দেহ নিয়ে বালুরঘাটের পথে রওনা দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন