খেয়ালি আবহাওয়ায় বিপাকে চা চাষ

দিনে মেঘলা আকাশ। গুমোট গরম। রাতে বিক্ষিপ্তভাবে কয়েক পশলা বৃষ্টি। এমন আবহাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন উত্তরবঙ্গের ক্ষুদ্র চা চাষিরা। গরমেপ জন্য শুরু হয়েছে পোকার উপদ্রব। পোকার হানায় সবুজ নষ্ট হচ্ছে পাতার। শুরু হয়েছে রেড স্পাইডারের আক্রমণও। হানা দিয়েছে লুপার, ক্যাটার ফিলারের মতো রোগ পোকাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৫ ০২:২০
Share:

দিনে মেঘলা আকাশ। গুমোট গরম। রাতে বিক্ষিপ্তভাবে কয়েক পশলা বৃষ্টি। এমন আবহাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন উত্তরবঙ্গের ক্ষুদ্র চা চাষিরা। গরমেপ জন্য শুরু হয়েছে পোকার উপদ্রব। পোকার হানায় সবুজ নষ্ট হচ্ছে পাতার। শুরু হয়েছে রেড স্পাইডারের আক্রমণও। হানা দিয়েছে লুপার, ক্যাটার ফিলারের মতো রোগ পোকাও। কচি পাতাও বাদ যাচ্ছে না রোগ পোকার আক্রমণ থেকে। এই পরিস্থিতিতে দিশেহারা প্রায় চল্লিশ হাজার চা চাষি।

Advertisement

ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতি সূত্রে জানানো হয়েছে, আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে এবার চা বলয়ে পোকার হামলা উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। দিনে অসহ্য গরম হলেও আকাশ মেঘে ঢাকা থাকছে। রোদ ছাড়া তাপমাত্রা এভাবে বেড়ে চললে পোকার আক্রমণ আরও বাড়বে এমনটাই আশঙ্কা চা চাষিদের।

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সুত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৫ মে জলপাইগুড়িতে তাপমাত্রার পারদ ৩৫ ডিগ্রি ছুঁয়ে যায়। এর পরে ধীরেধীরে গরম সামান্য কমলেও ফের ২১ মে তাপমাত্রা ৩৪ ডিগ্রির আশপাশে ঘোরাফেরা করেছে। ২৩ মে ছিল ৩৩ ডিগ্রি। জলপাইগুড়ি ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “৩৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় উন্নতমানের চা পাতা পাওয়া যায়। কিন্তু রোদ থাকতে হবে। এবার মে মাসে সেটাই মিলছে না। দিনে আকাশ মেঘে ঢাকা থাকছে। সঙ্গে গুমোট গরম। রাতেও যে খুব বৃষ্টি হচ্ছে তেমন নয়। ওই পরিস্থিতিতে একদিকে যেমন পাতার গুণগত মান খারাপ হচ্ছে। অন্যদিকে পোকার আক্রমণে নাজেহাল দশা হয়েছে।”

Advertisement

ক্ষুদ্র চাষিরা জানান, ওষুধ ছিঁটিয়েও পোকার আক্রমণ রোখা সম্ভব হচ্ছে না। পাতা হলদে হয়ে যাচ্ছে। লাভের আশায় সব্জি ও ধান চাষ ছেড়ে চা চাষে এগিয়েছেন তাঁরা বেশি সমস্যায় পড়েছেন। যেমন, রাজগঞ্জের কুকুরজানের বাসিন্দা বিমল রায় বলেন, “একে পাতার দামের ঠিক নেই। তার উপরে পোকার আক্রমণ বেড়ে চলায় খরচের টাকা কেমন করে তুলব বুঝে উঠতে পারছি না।”

ময়নাগুড়ির মাধবডাঙা এলাকার চাষি ক্ষিতীশ রায় বলেন, “সেচের খরচ কমলেও ওষুধের খরচ পাল্লা দিয়ে এমন ভাবে বেড়েছে তাল রেখে চলা সম্ভব হচ্ছে না। বাগানে পাতার অবস্থা দেখেও ভাল ঠেকছে না।” ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং ও কোচবিহার জেলায় ছড়িয়ে থাকা প্রায় ৪০ হাজার ছোট বাগান জুড়ে একই ছবি।

ওই বাগানগুলি থেকে উত্তরবঙ্গের মোট চা উৎপাদনের ৪০ শতাংশ পাওয়া যায়। এ বার প্রতিকূল আবহাওয়া এবং বেড়ে চলা পোকার আক্রমণের জন্য পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে সেটা এখনই বলা সম্ভব নয়। জলপাইগুড়ি ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সভাপতি জানান, ‘‘পরিস্থিতি কী দাঁড়াচ্ছে, তার দিকে নজর রাখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন