প্রায় ছ’মাস বন্ধ থাকার পর অবশেষে খুলল ডুয়ার্সের সোনালি চা বাগান। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে যুগ্ম শ্রম কমিশনারের দফতরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে বাগানের জটিলতা কেটে যাওয়ায় শুক্রবার থেকে সোনালি বাগান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মালিকপক্ষ। তাই বৃষ্টি উপেক্ষা করেই শুক্রবার সকাল থেকে কর্মচঞ্চল হয়ে ওঠে সোনালি চা বাগান। শুরু হয় পাতা তোলার কাজ। ৩৬৩ জন স্থায়ী শ্রমিক রয়েছে সোনালি বাগানে। বাগান খোলায় খুশির হাওয়া শ্রমিক মহল্লাতে। একই সঙ্গে হাঁফ ছেড়েছেন বাগান কর্তারাও।
গত বছরের ২২ নভেম্বরে সোনালি চা বাগানেই খুন হন বাগান মালিক রাজেশ ঝুনঝুনওয়ালা। এর পরই নিরাপত্তার অভাব দেখিয়ে বাগান ছাড়েন ম্যানেজার সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা। তখন থেকেই বন্ধ ছিল এই চা বাগান। কারণ রাজেশ বাবুর পরিবার নিজেদের উদ্যোগে বাগান চালাবেন না বলেই সাফ জানিয়ে দেন। অবশেষে বাগানের মালিকানা নতুন মালিককের হাতে তুলে দেওয়ার পর বাগান খোলার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
শ্রমিকদের পুরানো বকেয়া মেটানোর শর্তে শ্রম দফতরের উদ্যোগে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক প্রক্রিয়া শুরু হয়। জট কাটে দ্বিতীয় দফার বৈঠকে। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে গত অক্টোবর মাসের বকেয়া মজুরি আগামী সোমবারেই মিটিয়ে দেবেন মালিক পক্ষ। গত নভেম্বরে যে ২২দিন শ্রমিকেরা কাজ করেছেন তা ৮ ,৮ এবং ৬দিন করে আগামী তিনমাসের তিনটি কিস্তিতে মেটানো হবে।
একই সঙ্গে চলতি মাসের ডিসেম্বরে বাগানের বকেয়া থাকা শ্রমিকদের এরিয়ারও দেওয়া হবে। বাগানের শ্রমিক অরুণা ওঁরাও, হেমন্ত ওঁরাও সিমন ওঁরাও গত ৬ মাস নদীর পাথর তুলে এবং অন্যান্য চা বাগানগুলিতে অস্থায়ী শ্রমিক হিসাবে কাজ করে সংসার চালিয়েছেন। তাঁদের কথায়, ‘‘অবশেষে নিজেদের বাগান খোলায় আমরা ভীষণ খুশি। এখন থেকে বাগান মনে হচ্ছে ঠিক ভাবেই চলবে।’’ খুশি মালিকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান টি প্ল্যানটেশন অ্যাসোসিয়েশনও। সংগঠনের মুখ্য উপদেষ্টা অমিতাংশু চক্রবর্তীর কথায়,‘‘ সোনালি খুলে যাক এটা আমরা সকলেই চেয়েছিলাম। এখন বাগানটি যাতে ভালভাবে চলে সেটাই চাইছি।’’