প্রতীকী ছবি।
পাতার দাম যথাযথ মেলে না বলে বছরভর আক্ষেপ করেন ছোট চা চাষিরা। বছরের শেষে তাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে পাতার দাম। চলতি ডিসেম্বরে ছোট চা বাগানের পাতার দাম কেজি প্রতি ১৬ টাকায় পৌঁছে গিয়েছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় যা নাকি রেকর্ড বলে দাবি। তবে এই দাম বৃদ্ধিতে অশনিসঙ্কেতও দেখছেন চা চাষিরা। শীতের সুখা মরসুমে চা পাতা তোলা বন্ধ রাখা হয়। গুণগতমান বজায় রাখার জন্যই এই প্রথা। অতিরিক্ত দামের কারণে সুখা মরসুমেও চা পাতা তোলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে গুণগত মান তলানিতে ঠেকবে। এমন ভেবেই শীতের তিন মাস বটলিফ কারখানা বন্ধ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। বেশ কিছু বটলিফ কারখানা ইতিমধ্যেই সুখা মরসুমে কারখানা বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছে।
দেশের মোট চা উৎপাদনের প্রায় ৩০ শতাংশ ছোট চা বাগানের জোগান বলে নানা সমীক্ষায় উঠে এসেছে। তার পরেও ছোট বাগানের পাতার দাম নিয়ে অভিযোগের শেষ ছিল না চাষিদের। পাতার মান ভাল হলেও দাম মেলে না বলে অভিযোগ। কেজি প্রতি পাতার দাম ৫ টাকায় নেমে গিয়েছিল গত বছরে। চাষিদের অভিযোগ, দালালচক্র ইচ্ছেকৃত ভাবে পাতার দাম কমিয়ে রাখে। তার থেকে রক্ষাকবচ দিতে চা পর্ষদ প্রতি মাসে পাচার ন্যূনতম দর এসএমএস করে চাষিদের মোবাইলে পাঠিয়ে দেয়। চলতি ডিসেম্বরে পাতার দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে চাহিদায় পরিবর্তনের কারণ দাবি করেছে পর্ষদ। শীতের শুরুতেই চায়ে চাহিদা বেড়েছে বলে কাঁচা পাতার দামও বেড়েছে।
ছোট চা চাষিদের সর্বভারতী। সংগঠনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পাতার দাম বেড়ে যাওয়া নিঃসন্দেহে খুশির খবর। তবে তা নিয়ে চিন্তাও রয়েছে। পাতার মান বজায় রাখাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তা সুনিশ্চিত করতেই শীতের সুখা সময়ে বটলিফ কারখানা বন্ধের সিজদ্ধান্ত হয়েছে। আশা করছি আগামী বছরে পাতার মান এবং দাম দুইই ভাল থাকবে।’’
ছোট বাগানের চা পাতা মানের কারণেই দাম পায় না বলে দাবি রয়েছে। সে কারণেই মান নিয়ে মাথা ব্যাথা চা পর্ষদের। মানের মাপকাঠি টপকাতে না পাড়ায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে এখনও সে ভাবে প্রবেশ করতে পারেনি ছোট বাগানের পাতা। একের পর এক ছোট চা বাগান গজিয়ে ওঠায় পর্ষদও পাতার মান নিয়ে কড়াকড়ি করতে চাইছে। ছোট চা বাগানগুলিকে নানা সহায়তাও দিচ্ছে। ছোট চা চাষিদের একাংশের মতে মান নিয়ন্ত্রণে রাখতে গেলে সবার প্রথমে যথেচ্ছভাবে পাতা তোলা বন্ধ করতে হবে। তার প্রথম ধাপ সুখা মরসুমে পাতা তোলা বন্ধ করার পদক্ষেপ।