দাড়িভিট স্কুল।—ফাইল চিত্র।
অক্টোবরের বেতন পেয়েছেন মাত্র দু’দিন আগে। কিন্তু ফের বেতন আটকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন দাড়িভিট হাইস্কুলের শিক্ষকেরা।
দাড়িভিট-কাণ্ডের জেরে বিজেপি বন্ধ ডেকেছিল গত ২৬ সেপ্টেম্বর। এখন স্কুল কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিয়েছেন, ওই ধর্মঘটের দিন শিক্ষকেরা যে স্কুলে গিয়েছিলেন তার প্রমাণ জমা দিতে হবে। শিক্ষকেরা এখন সেই প্রমাণ জোগাড়ে তৎপর হয়ে উঠেছেন। যদিও ওই নির্দেশিকার পিছনে স্কুল দফতরের কোনও ভূমিকা আছে কিনা সে-ব্যাপারে কেউ কিছু বলতে পারেননি। তবে শিক্ষকদের একটা বড় অংশের আশঙ্কা, বন্ধের দিন স্কুলে যাওয়ার যথাযথ প্রমাণ দিতে না পারলে পরের মাসের বেতন ফের আটকে যাবে।
বিষয়টি নিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনিল মণ্ডল কিংবা জেলা স্কুল পরিদর্শক সুজিত মাইতি— কেউই মন্তব্য করতে চাননি। ইসলামপুরের মহকুমাশাসক তথা ওই স্কুলের প্রশাসক মণীশ মিশ্র বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই।’’ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘স্কুল প্রসঙ্গে আমি কোনও মন্তব্যই করব না।’’ জেলার স্কুল পরিদর্শককে একাধিকবার ফোন করা হলেও বারবারই তিনি ফোন কেটে দিয়েছেন। মেসেজ করা হলেও কোন উত্তর দেননি।
দাড়িভিট-কাণ্ডের পর স্কুলে না যাওয়ার অভিযোগে স্কুলের সমস্ত শিক্ষককে শো-কজ করেছিলেন জেলা স্কুল পরিদর্শক। পরে স্কুল খোলায় বাধা দেয় নিহতদের পরিবার। তখনও শিক্ষকেরা স্কুলে ঢুকতে পারেননি। এই পরিস্থিতিতে গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিজেপির ডাকা ধর্মঘটে তাঁরা স্কুলে কেন যাননি, জানতে চাওয়া হয়েছিল শিক্ষকদের কাছে। স্কুল না যাওয়ার কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়। শো-কজের জবাবও দিয়েছিলেন শিক্ষকেরা। তার পরেও অক্টোবরের বেতন আটকে যায় তাঁদের। স্কুল খোলার পর তাঁরা যেতে শুরু করলেও দু’দিন আগে বেতন চালু হয়। এখন ফের বন্ধের দিন স্কুল যাওয়ার প্রমাণ জোগাড় করতে হচ্ছে বলে শিক্ষকদের একাংশ জানিয়েছেন। শিক্ষকেরা জানান, ধর্মঘটের দিন তাঁরা স্কুল যাওয়ার চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু স্কুলে ঢোকার আগেই বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল।
এ দিকে, দাড়িভিট-কাণ্ডের সিবিআই তদন্তের দাবিতে এবং গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে সমস্ত মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে স্কুলের বাইরে অবস্থান বিক্ষোভে রয়েছেন নিহত দুই পরিবারের সদস্যরা। এ দিন তাঁদের সঙ্গে দেখা গেল জামিন পাওয়া বেশ কয়েকজন গ্রামবাসীকে। নিহত তাপস বর্মণের মা মঞ্জু দেবী বলেন, ‘‘আমরা আমাদের দাবিতে অনড়।’’ অপরদিকে, গ্রেফতার পর জামিনে ছাড়া পেয়েছেন পরাণ রায়, বঙ্কিম মজুমদাররা। তাঁরা জানান, তাঁরা চান মামলার তুলে নিক প্রশাসন।