প্রতীকী ছবি
ট্রুন্যাট মেশিনে পরীক্ষার পরই চিকিৎসকদের একাংশের মনে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। অবশেষে সেটাই সত্যি হল। সম্প্রতি আলিগড় থেকে বীরপাড়া ফেরত এক তরুণী-সহ পাঁচ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ রয়েছে বলে জানিয়ে দিল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ।
শনিবার গভীর রাতে পাঁচ জনের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই তাঁদের তপসিখাতার সারি হাসপাতাল থেকে শিলিগুড়ির মাটিগাড়ায় করোনা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এ দিকে, এই পাঁচ জনকে নিয়ে আলিপুরদুয়ার জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ১৪।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পাঁচ জনের মধ্যে তিন জনের বাড়ি মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকে। বাকি দু’জনের মধ্যে একজন ফালাকাটা ও অন্য জন আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা। কাজের সূত্রে যাঁরা প্রত্যেকে আলিগড়ে থাকতেন। চতুর্থ দফার লকডাউনের মধ্যেই তাঁরা জেলায় ফেরেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের বীরপাড়ার একটি কোয়রান্টিন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। এরই মধ্যে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানতে পারেন, এই পাঁচ জনের সঙ্গে আলিগড় থেকে উত্তরবঙ্গের আর একটি জেলায় ফেরা একজনের শরীরে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তার পরেই বৃহস্পতিবার সকালে ফালাকাটা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ট্রুন্যাট মেশিনে তাঁদের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। যে পরীক্ষায় প্রত্যেকের শরীরে করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়ে।
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ট্রুন্যাট মেশিনে কারও করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়লে বিষয়টিতে নিশ্চিত হতে ওই মেশিনেই দ্বিতীয় ধাপে আরেকটি পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। কিন্তু সেই পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় কিট এখন পর্যন্ত কোথাও সরবরাহ শুরু হয়নি।’’ এই অবস্থায় ট্রুন্যাট মেশিনে পরীক্ষার ফল দেখার পরে বৃহস্পতিবার সকালেই পাঁচ জনের লালারসের নমুনা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়। সেইসঙ্গে পাঁচজনকে মাদারিহাটের কোয়রান্টিন সেন্টার থেকে তপসিখাতায় করোনার সারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর থেকে শুরু হয় মেডিক্যাল কলেজ থেকে রিপোর্ট আসার অপেক্ষা। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, শনিবার গভীর রাতে মেডিক্যাল কলেজের রিপোর্ট তাঁদের হাতে পৌঁছয়। যে রিপোর্টে পাঁচজনই করোনা পজ়িটিভ বলা হয়।
আলিপুরদুয়ার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পূরণ শর্মা বলেন, ‘‘রাতেই পাঁচজনকে শিলিগুড়িতে কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’’
গত ৩০ এপ্রিল আলিপুরদুয়ার জেলায় প্রথম চার জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। যাঁদের প্রত্যেকেই দিল্লি থেকে ফিরেছিলেন। এর দিনকয়েক বাদে কলকাতা থেকে ভ্যাকসিন নিয়ে আসা কলকাতার এক গাড়িচালকের শরীরে করোনা ধরা পড়ে। গত বুধবার রাতে ফালাকাটার বাসিন্দা চার জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। আর এ বার একসঙ্গে পাঁচ জন জেলার বাসিন্দা আক্রান্ত হলেন।