নির্যাতিতার সঙ্গে কথা বলছেন পাপিয়া ঘোষ। — নিজস্ব চিত্র।
তাঁকে মারধর করা হয়েছে বিবস্ত্র করে। বুধবার দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী (সমতল) পাপিয়া ঘোষকে এমনটাই জানালেন শিলিগুড়ির অভিযোগকারিণী। বুধবার ওই অভিযোগকারিণীর বাড়িতে যান পাপিয়া। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, ওই কাণ্ডে ‘বিবস্ত্র করা’র বিষয়টি এফআইআরে উল্লেখ করা হয়নি। অভিযোগকারিণীর পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পাপিয়া। তবে শিলিগুড়ির ঘটনাকে সামনে রেখে আক্রমণ শানাচ্ছে বিজেপি।
বুধবার শিলিগুড়ির ওই অভিযোগকারিণীর বাড়িতে যান পাপিয়া। তাঁকে ওই মহিলা বলেন, ‘‘ওরা মারধর করতে অথবা ধর্ষণ করার জন্য আমাকে মিটিংয়ে ডেকেছিল। ওখানে যেতেই আমার উপর আক্রমণ হয়। শুধু মহিলারা নন, পুরুষেরাও মিটিংয়ে ছিলেন। পঞ্চায়েত সদস্যও সেই সময়ে ছিলেন। আমার কাপড় পুরো ছিঁড়ে দিয়েছে। তার পর আমাকে গামছা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। আমি একা থাকি বলেই আমার সঙ্গে এমন হল!’’ মহিলার আরও বক্তব্য, ‘‘এখন আমি প্রচণ্ড ভয়ে আছি। আমার দু’টি শিশুকে স্কুলে পাঠাতে ভয় লাগছে। ওরা হুমকি দিচ্ছে। আমি বিচার চাই। আমি দু’টি বিয়ে করতে পারি। তা বলে এমন করবে? আমি এর বিচার চাই।’’
ওই মহিলার পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন পাপিয়া। অভিযোগকারিণীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘এটা রাজনীতির বিষয় নয়, অন্য ঘটনা। আপনি কারও কথায় কান না। আপনি যাতে বিচার পান সেই চেষ্টাই হচ্ছে। আপনি নির্ভাবনায় থাকুন। কিচ্ছু হবে না। কেউ যদি এটা নিয়ে রাজনীতি করতে চায় তা হলে তা করতে দেবেন না।’’ তাঁর অভিযোগ, এই ঘটনাগুলিকে সামনে এনে মানুষের নজর মণিপুরকাণ্ডের থেকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। স্থানীয় নেতৃত্বকে ওই মহিলার পাশে থাকার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
এলাকার বিজেপি বিধায়ক তথা বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আনন্দময় বর্মণের দাবি, ‘‘নির্যাতিতার সঙ্গে আমার ফোনে কথা হয়েছে। যারা এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের সঙ্গে বিজেপির বিন্দুমাত্র যোগ নেই। মণিপুরের ঘটনা তাঁরা বার বার বলছেন। কিন্তু এই রাজ্যে কী ঘটছে?’’
ডুয়ার্স-তরাই আদিবাসী মহিলা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি বিনিতা কুজুর টেটে এ নিয়ে বলেন, ‘‘এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক একটি ঘটনা। আজ তৃণমূলের সভানেত্রী গিয়েছিলেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন দোষীরা শাস্তি পাবে। তা না হলে ঘটনার প্রতিবাদে আগামিদিনে আমরা রাস্তায় নামব।’’
শিলিগুড়ির ওই ঘটনায় দু’টি এফআইআর দায়ের হয়েছে। দু’টি অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে দু’জন করে মোট চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের অবশ্য দাবি, এফআইআরে বিবস্ত্র করার উল্লেখ করা হয়নি। গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। এ নিয়ে গোপন জবানবন্দিও নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার শুভেন্দ্র কুমার।