—প্রতীকী চিত্র
মালদহে বাড়ছে ডেঙ্গির প্রকোপ। চার দিন আগেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত সন্দেহে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন কালিয়াচকের এক বাসিন্দা। নতুন করে আরও তিন জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত সন্দেহে ভর্তি রয়েছেন হাসপাতালে।
সূত্রের খবর, মালদহের একটি বেসরকারি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরিতে এলাইজা রক্ত পরীক্ষায় তাঁদের শরীরে ধরা পড়েছে ডেঙ্গির এনএস-ওয়ান জীবাণু। তবে ডেঙ্গি পুরোপুরি নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ম্যাক এলাইজা পদ্ধতিতে তাঁদের রক্ত পরীক্ষার জন্য মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রো বায়োলজি বিভাগে পাঠিয়েছে বলে খবর।
এ দিকে অভিযোগ, এই তিন রোগীকে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত সন্দেহ করা হলেও তাঁদের সাধারণ রোগীদের সঙ্গেই বিনা মশারিতে রাখা হয়েছে। ফলে অন্যান্য রোগীদের মধ্যেও সংক্রমণের সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বিগ্ন অন্যান্য রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, এক শয্যায় দু’জন করে রোগী থাকায় মশারি টাঙাতে সমস্যা হচ্ছে।
হাসপাতালের সুপার অমিত দাঁ বলেন, ‘‘গত বছরের তুলনায় এ বার ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে রোগী ভর্তির সংখ্যা কম। তবে গত কয়েক দিনে চার-পাঁচজন ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের রক্তে এনএস-ওয়ান জীবাণু মিলেছে। কিন্তু ম্যাক এলাইজা পরীক্ষা না হওয়া পর্যন্ত আমরা তাকে ডেঙ্গি বলতে পারি না।’’
গত কয়েক বছর ধরেই মালদহে ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিচ্ছে। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, জেলায় ২০১৬ এ ১২৪৮ জন, ২০১৭ এ ১৫৮৯ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন। কিন্তু কারও মৃত্যু হয়নি। এ বার জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকেই জেলার দুই পুর এলাকায় এবং এপ্রিল থেকে জেলার ১৫টি ব্লকে ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতায় নেওয়া হয় নানা উদ্যোগ। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৫০। কমেছে হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যাও। যদিও এখন ফের ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিচ্ছে। চার দিন আগে ডেঙ্গি সন্দেহে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি হন কালিয়াচকের শাহবাজপুর গ্রামের ইন্তাজ আলি। শুক্রবার আরও তিন জন ডেঙ্গি সন্দেহে ভর্তি হন।
হাসপাতাল সূত্রেই খবর, বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি হন ইংরেজবাজারের মিলকির বাসিন্দা তাপিজউদ্দিন শেখ। পরিবার সূত্রে খবর, ১৫ সেপ্টেম্বর তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন। ওষুধ খেয়েও কাজ হচ্ছিল না। পরে সেই ডাক্তারের পরামর্শেই বেসরকারি একটি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি থেকে রক্ত পরীক্ষা করলে এনএস-ওয়ান পজিটিভ রিপোর্ট মেলে। তারপরই মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়। একই ভাবে কালিয়াচকের আলিপুরের রেজাউল করিম গত ১০ দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। বেসরকারি প্যাথলিক্যাল ল্যাবোরেটরিতে রক্ত পরীক্ষা করালে তাঁরও এনএস-ওয়ান পজিটিভ রিপোর্ট আসে। তাঁকে ভর্তি করা হয় এই হাসপাতালে।
আক্রান্ত তৃতীয় জন হলেন রতুয়ার কারবোনার বাসিন্দা রেজাউল হক। তারও রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট এনএস-ওয়ান পজিটিভ।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, বছরের শুরু থেকেই পদক্ষেপ নেওয়ায় এখনও ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে তাঁর দাবি।