স্লোগান শুনেই ক্ষুব্ধ অভিষেক

জানালার কাচ তখনও নামানো ছিল। রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা জনতার দিকে হাত নাড়ছিলেন তিনি। আচমকাই পাশ থেকে যুব তৃণমূলের এক নেতার নাম ধরে স্লোগান ভেসে আসে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৫৭
Share:

ফাইল চিত্র।

সভার শেষে কনভয় নিয়ে রওনা দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালার কাচ তখনও নামানো ছিল। রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা জনতার দিকে হাত নাড়ছিলেন তিনি। আচমকাই পাশ থেকে যুব তৃণমূলের এক নেতার নাম ধরে স্লোগান ভেসে আসে। কনভয় থামিয়ে গাড়ি থেকে নেমে পড়লেন তিনি। তার পরেই আঙুল উচিয়ে স্লোগান দিতে থাকা জনা তিনেক ছেলেকে ধরতে নির্দেশ দেন নিরাপত্তারক্ষীদের। তাই দেখে দৌড়ে পালিয়ে ভিড়ের মধ্যে মিশে যায় ওই যুবকরা। ওই যুবকদের সম্পর্কে খোঁজ নিতে বলে বেরিয়ে যান অভিষেক।

Advertisement

বুধবার এই ঘটনা নিয়ে আলোচনায় মজে রইল কোচবিহার। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “ওই যুবক নেতৃত্বের নির্দেশ অমান্য করে স্লোগান দিয়ে ভুল বার্তা দিচ্ছিলেন। সে জন্যেই ক্ষুব্ধ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।”

ঠিক কী বলেছিলেন ওই যুবকরা, তা নিয়ে অবশ্য বিরোধ রয়েছে। কারও দাবি, ‘যুব তৃণমূল জিন্দাবাদ’ বলেছিলেন। কারও দাবি, বহিষ্কৃত যুব নেতা নিশীথ প্রামাণিকের নামে স্লোগান দিয়েছিলেন। আবার কেউ কেউ দাবি করেছেন, অভিষেকের পাশাপাশি কোচবিহার জেলা যুব সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়-সহ একাধিক যুব নেতার নামে স্লোগান দিচ্ছিলেন ওঁরা।

Advertisement

কোচবিহারে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে তিতিবিরক্ত ছিলেন অভিষেক। সভায় অন্তত দশ মিনিট ধরে তিনি দ্বন্দ্ব নিয়ে সবাইকে সতর্ক করেন। তিনি নিজে যুব তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি হয়েও জানিয়ে দেন, মূল তৃণমূল ছাড়া শাখা সংগঠনের কোনও অস্তিত্ব নেই। দ্বন্দ্ব ছেড়ে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ না করলে কাউকে ছেড়ে কথা বলবেন না, সে হুঁশিয়ারিও দেন। নাম না করে যুব সংগঠনের বহিষ্কৃত নেতা নিশীথ প্রামাণিক সম্পর্কে বলেন, দলে থেকে দলের ক্ষতি করার চেষ্টা করছিলেন তিনি। এই সভা শেষ হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই তাঁর কনভয় রওনা দেয়। সেই সময় সেখানে রবীন্দ্রনাথবাবু তো, বটেই যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়, বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ, বিধায়ক উদয়ন গুহ-সহ একাধিক নেতা হাজির ছিলেন।

পার্থবাবু বলেন, “আমরা অনেকটা পিছনে ছিলাম। ঠিক বুঝতে পারিনি। যুব তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতির নির্দেশে বিষয়টি পুলিশ-প্রশাসন দেখছে।” ওই যুবকদের দু’জন দিনহাটার বাসিন্দা বলে দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে। তাঁরা ওই এলাকায় যুব তৃণমূল নেতা বলে পরিচিত। তাঁদেরই এক জনের কথায়, “আমরা তো নেতার নামেই স্লোগান দিচ্ছিলাম। তিনি হঠাৎ কেন রেগে গেলেন, তা বুঝতে পারছি না।” নাম প্রকাশে জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলেন, “দ্বন্দ্ব থামাতে তিনি যে কঠোর হাতে রাশ ধরবেন, তা অভিষেক গাড়ি থেকে নেমে এসেই বুঝিয়ে দিয়েছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন