সূচনা: ঘুরে দেখা হচ্ছে ট্রমা কেয়ার সেন্টার। নিজস্ব চিত্র
ইসলামপুর ট্রমা কেয়ার সেন্টার চালু হয়ে গেল শুক্রবার। অথচ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এখনও এই সুবিধা দেওয়া গেল না। বছর পাঁচেকেরও আগে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ট্রমা কেয়ার তৈরির ব্যাপারে উদ্যোগী হন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আজও এর ন্যূনতম পরিকাঠামোটুকু গড়ে তুলতে পারেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফলে সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে উত্তরবঙ্গের রোগীদের ভরসা বেসরকারি নার্সিংহোমই।
এই হাসপাতালে সিটি স্ক্যান যন্ত্রটাই নেই। ট্রমা কেয়ার ইউনিটে অপারেশন থিয়েটারে পাইপলাইনের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। এই পরিকাঠামো নেই এখানে। ট্রমা কেয়ারে দুর্ঘটনাগ্রস্ত রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই দু’টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেইসঙ্গে স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞের অভাব তো রয়েছেই। হাসপাতালের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, অর্থোপোডিক বিভাগে চিকিৎসক কম রয়েছে। ট্রমা কেয়ারের জন্য অর্থো-মেডিসিনি এবং অর্থো-সার্জারির পর্যাপ্ত চিকিৎসক নেই। হাসপাতালে নিউরো-মেডিসিন এবং নিউরো-সার্জারির চিকিৎসকও নেই। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার কৌশিক সমাদ্দার বলেন, ‘‘সিটি স্ক্যান যন্ত্র কেনার প্রক্রিয়া চলছে। ট্রমা কেয়ারের জন্য চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং যন্ত্রাংশ অধিকাংশই চলে এসেছে। অনেক সরঞ্জাম বসানো হয়েছে। বাকি কাজ দ্রুততার সঙ্গে করার চেষ্টা চলছে।’’
পথ দুর্ঘটনায় জখমদের চিকিৎসার জন্য উত্তরবঙ্গে কোনও সরকারি হাসপাতালে ট্রমা কেয়ার না থাকায় রোগী নিয়ে পরিবারের লোকদের নার্সিংহোমে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। এখনও সেই অবস্থাই চলছে। সেই কারণেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ট্রমা কেয়ার চালুর বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। অথচ ‘হচ্ছে হবে’ করে কয়েক বছর গড়িয়ে গেলেও আজও ট্রমা কেয়ারের পরিকাঠামো তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। হাসপাতালের পুরনো সিটিস্ক্যান যন্ত্র অকেজো হওয়ার পর কয়েকবার তা মেরামত করে কাজ চালানোর চেষ্টা করা হলেও সেটি অকেজো হয়ে পড়েছে। নতুন সিটিস্ক্যান যন্ত্র কেনার কথা জানানো হলেও বছর দেড়েকেও সেই কাজ হয়নি। ফলে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের সিটিস্ক্যান করাতে বিপাকে পড়তে হয় পরিজনদের। অ্যাম্বুল্যান্সে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে সিটিস্ক্যান করিয়ে আনতে হয়। চিকিৎসকদের একাংশ জানান, পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম রোগীদের চিকিৎসার জন্য সিটি স্ক্যান যন্ত্র সবার আগে দরকার।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে উত্তরবঙ্গের জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে নিউরো-মেডিসিন এবং নিউরো-সার্জারির চিকিৎসক দিতে অনুরোধ করেন। তাতে ওই ট্রমা কেয়ার যেমন চালু করা সহজ হবে, তেমনই ইসলামপুরের ট্রমা কেয়ারে চিকিৎসাধীন রোগীদের জন্য পরামর্শ মিলবে। প্রয়োজনে ওই রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রেফার করা যাবে।