মনোনয়ন পত্র জমা দিতে গিয়ে বিধি ভাঙার অভিযোগ উঠল তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে। শুক্রবার কোচবিহার পুরসভার দু’টি ওয়ার্ডে মনোনয়ন পত্র জমা দেন তৃণমূলের দুই প্রার্থী।
শুক্রবার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে মনোনয়ন পত্র জমা দেন পরিতোষ পাল এবং ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে মনোনয়ন পত্র জমা দেন তরুণ রায়। প্রশাসন সূত্রের খবর, সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ মিছিল নিয়ে তৃণমূল কর্মীরা মহকুমাশাসকের দফতরের দিকে যান। অভিযোগ, মহকুমাশাসকের অফিসের সামনে কোনও পুলিশি ব্যারিকেড ছিল না। পুলিশ কর্মীদেরও আশেপাশে দেখা যায়নি। তৃণমূলের দুই প্রার্থী সদলবলে মহকুমাশাসকের অফিসের ভিতরে ঢুকে যান। অফিসের ভিতরে প্রার্থীদের নামে স্লোগানও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আওয়াজ শুনে নিজের চেম্বার বসে থাকা মহকুমাশাসক বেরিয়ে আসেন। অবস্থা দেখে সবাইকে বাইরে বের করে দেওয়ার জন্য জোরে নির্দেশ দিতে থাকেন। সে সময়েই সেখানে পৌঁছন তৃণমূল জেলা সভাপতি। কয়েক মিনিটের মধ্যে পুলিশ পৌঁছয়। পুলিশ সবাইকে বের করে দিয়ে রাস্তার দুই ধারে ব্যারিকেড তৈরি করে।
মহকুমাশাসক বিকাশ সাহার কথায়, “সব সময়ই অফিসে নানা কাজে মানুষ আসেন। আজকে ভিড় একটু বেশি হয়। কারা কী কাজে এসেছে বোঝা যাচ্ছিল না। সেই সময় দু’জন মনোনয়ন পত্র জমা দিতেও আসেন। দ্রুত সবাইকে সরিয়ে দেওয়া হয়।” রবীন্দ্রনাথবাবু অবশ্য বিধিভঙ্গের অভিযোগ ঠিক নয় বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “মহকুমাশাসকের অফিসের ভিতরে নির্দিষ্ট সংখ্যক লোক গিয়েছে। বিধিভঙ্গের অভিযোগ ঠিক নয়।”
বিরোধী দলগুলি অবশ্য দাবি করেছে, প্রশাসনকে প্রভাবিত করতেই তৃণমূল অরাজকতা তৈরি করতে চাইছে। ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, “রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নিজেদের সম্পত্তি বলে ভাবছে তৃণমূল। তাই যা খুশি তাই করছে। আগামী দিনে আরও এমন অনেক ঘটনা ঘটবে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।” বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক নিখিল রঞ্জন দে অভিযোগ করে বলেন, “ভোট স্বাভাবিক ভাবে হতে দিতে তৃণমূল ভয় পায়। সে কারণে সর্বত্র একটা সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে। নির্বাচন কমিশনের অফিসকেও গুরুত্ব দিচ্ছে না।”
এ দিকে, ক্ষোভ তৈরি হয়েছে তৃণমূলের অন্দরেও। অভিযোগ, তৃণমূল এখনও চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেনি। তার আগেই দুই প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেন তা নিয়ে তৃণমূল সমর্থকদের একাংশ ক্ষুব্ধ। তুফানগঞ্জের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মীদের একাংশ। তাদের অভিযোগ, ওয়ার্ড কমিটি চাঁদমোহন সাহাকে প্রার্থী চেয়ে দলীয় নেতৃত্বকে জানায়। সেখানে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে অন্য একজনের নাম তাঁরা জানতে পেরেছেন বলে তাঁরা দাবি করেছেন। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “যদি কোথাও কোনও সমস্যা থাকে, তবে আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়া হবে।”