ফেরা: স্টেশন থেকে উদ্ধার করা হল রকি ও আরিফকে। নিজস্ব চিত্র
ট্রেনে চড়ে কলকাতা যাওয়ার গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিল। সেই গল্পই সত্যি করতে স্বপ্ন দেখত দুই বালক। স্বপ্ন পূরণ করতে ৫০০ টাকা চুরি করে বাড়ি থেকে পালায় দু’জনে। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে কলকাতার ট্রেনে উঠেও ধরা পড়ে ফিরতে হল দুই বালককে। মালদহের চাঁচলের কাশীপাড়া এলাকার ঘটনা। রবিবার রাতে কলকাতাগামী একটি ট্রেন থেকে তাদের মালদহ স্টেশনে উদ্ধার করে চাইল্ড লাইন ও জিআরপির কর্মীরা। সোমবার বিকেলে দু’জনকেই তাদের পরিজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ছেলেদের ফিরে পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে পরিজনদের।
জিআরপির মালদহের আইসি ভাস্কর প্রধান বলেন, ‘‘চাইল্ড লাইনের সহায়তায় দুই বালককে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের পরিজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।’’ চাঁচলের আইসি সুকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘ছেলে দু’টো উদ্ধার হয়েছে জেনে ভাল লাগছে।’’
পুলিশ ও পরিজনদের সূত্রে জানা যায়, দুই বালকের এক জন বছর এগারোর রকি শেখ, অন্য জন বছর দশেকের আরিফ হোসেন। রকি পঞ্চম ও আরিফ তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। সহপাঠী না হলেও পাশাপাশি দুই বাড়ির দুই ছেলের মধ্যে খুবই বন্ধুত্ব ছিল। সারাক্ষণ তারা একসঙ্গেই থাকত। রবিবার বিকেলে খেলতে বার হওয়ার পরে সন্ধে নেমে গেলেও তারা বাড়ি না ফেরায় শুরু হয় খোঁজ। তার পরই বাড়ি থেকে টাকা খোয়া গিয়েছে বলে নজরে আসে বাড়ির বড়দের। তাঁদের সন্দেহ হয় যে তারা পালিয়েছে। চাঁচল থানায় নিখোঁজের অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় দুই বালকের ছবি দিয়ে শুরু হয় প্রচার। এদিকে মালতীপুর থেকে দুই বালক মালদহে গিয়ে স্টেশনে পৌঁছয়। তার পরে রাতে তারা কলকাতার ট্রেনে চেপে বসে। সোশ্যাল মিডিয়ায় দুই বালকের ছবি দেখে সতর্ক ছিলেন জিআরপি ও চাইল্ড লাইনের কর্মীরা। নজরদারি চালানোর সময় তাদের ট্রেন থেকে উদ্ধার করা হয়।
রকির বাবা পেশায় গাড়ি চালক। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘ওরা যে এমন করতে পারে তা ভাবতেই পারছি না। কলকাতা চলে গেলে যে কী হত ভাবতেই শিউরে উঠছি!’’
আর রকির কথায়, ‘‘কলকাতা দেখেই বাড়ি ফিরে আসব ভেবেছিলাম। যাক, এ ভাবে আর না বলে বাড়ি থেকে কোথাও যাব না।’’