অনিচ্ছাকৃত খুনের দায়ে অশোকরা

কর্তব্যরত চার জন অফিসার সহ কয়েক জন পুলিশকর্মীর গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে খুনের চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের হল শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা মেয়র অশোক ভট্টাচার্য-সহ একাধিক নাম নেতানেত্রীর নামে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:১৩
Share:

কর্তব্যরত চার জন অফিসার সহ কয়েক জন পুলিশকর্মীর গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে খুনের চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের হল শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা মেয়র অশোক ভট্টাচার্য-সহ একাধিক নাম নেতানেত্রীর নামে। অভিযুক্তদের তালিকায় নাম রয়েছে সিপিএমের জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার, আরএসপি জেলা সম্পাদক তাপস গোস্বামী, মেয়র পারিষদ জয় চক্রবর্তী-সহ ৯ জন। অভিযোগে আরও ১০০ জন ছিলেন বলে উল্লেখ রয়েছে। মঙ্গলবার রাত অবধি অভিযুক্তদের মধ্যে অন্যতম সুকৃতি আশ-সহ তিন জনের খোঁজে তল্লাশি চললেও তাঁদের হদিস মেলেনি।

Advertisement

ইসলামপুরের ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় নামা বাম কর্মীদের মিছিল আটকায় পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল পোড়ানো নিয়ে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। কোনও ভাবেই অফিসারেরা কুশপুতুলটি জ্বালাতে দিতে চাননি। পুলিশের অভিযোগ, ধস্তাধস্তির সময় ওই এসএফআই নেত্রী অফিসার, কর্মীদের গায়ে কেরোসিন তেল ছিটিয়ে আগুন লাগানোর জন্য চিৎকার করেন বলে অভিযোগ। ভিডিয়ো ফুটেজে তা পরিষ্কার রয়েছে বলে পুলিশের দাবি। রাতে দুই সিপিএম নেতাকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নিয়ে যাওয়া হলেও গভীর রাতে তাঁদের ব্যক্তিগত মুচলেকায় ছেড়ে দেওয়া হয়। রাতেই থানায় পুলিশ কমিশনার ভরতলাল মিনার নির্দেশে শিলিগুড়ি থানা এবং দু’টি পুলিশ ফাঁড়ির অফিসারদের নিয়ে বৈঠক করেন এসিপি (পূর্ব) অচিন্ত্য গুপ্ত। পুলিশ নিজেই মামলা রুজু করবে বলে ঠিক হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, রাতেই পানিট্যাঙ্কি ফাঁড়ির ওসি সমীর তামাং শিলিগুড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সমীরবাবুও ঘটনার সময় হিলকার্ট রোডে কর্তব্যরত ছিলেন। শিলিগুড়ির আইসি দেবাশিস বসু, খালপাড়ার ওসি সুবল ঘোষ, দাওয়া শেরপা এবং সুবীর সেনের শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয়েছে। প্রত্যেকের শরীরে কেরোসিন তেল এবং চোখ জ্বালার সমস্যা নথিভুক্ত হয়েছে। রাতেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা (৩০৭ আইপিসি), সরকারি কর্মীকে কাজে বাধা (৩৫৩ আইপিসি), সরকারি কর্মীকে মারধর, হেনস্থা (১৮৬ আইপিএস) মতো জামিন অযোগ্য ধারা ছাড়াও ষড়যন্ত্রের ধারায় মামলা হয়েছে। সকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনারও।

বাম নেতা কর্মীদের দাবি, পুলিশ অফিসার-কর্মীদের জন্যই পরিস্থিতি এই পর্যায়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল পোড়াতে না দেওয়ার অফিসারদের জেদ থেকেই ধাক্কাধাক্কি। তাতে কারও হাত থেকে কেরোসিন তেল ছিটকে গিয়ে পড়তে পারে। এটা ইচ্ছাকৃত বিষয়ই নয়। বিধায়ক অশোকবাবু বলেন, ‘‘আমরা কী পাগল না কি! প্রকাশ্যে আমরা পুলিশ খুন করতে চেয়েছিলাম! আইনি লড়াই হবে। আমি তো ঘুরেই বেড়াচ্ছি, পুলিশ দরকার হলে গ্রেফতার করুক।’’

Advertisement

পুলিশ কর্মীদের অবশ্য দাবি, ধাক্কাধাক্কিতে ঘটনাটি ঘটতে পারে ঠিকই। কিন্তু কয়েকজন যখন কেরোসিন তেল ছিটিয়ে আগুন লাগানোর কথা বলছিলেন, তখন কেউ বাধা দেননি। সকলে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement