ট্রাকে আগুন মহদিপুরে

মঙ্গলবার রাতে দু’টি ট্রাকে আগুন লাগানোর পর বুধবার সকালে একটি চাল ও পাথরের গাড়িতে দুষ্কৃতীরা আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৮ ০২:৪৩
Share:

স্থানু: পোড়া ট্রাক। নিজস্ব চিত্র

ফের অশান্তির আগুনে পুড়ল পণ্যবাহী ট্রাক। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত মালদহের মহদিপুর আন্তর্জাতিক সীমান্ত বাণিজ্যকেন্দ্রে পরপর চারটি পণ্যবাহী ট্রাকে আগুন লাগানো হয় বলে দাবি রফতানিকারকদের। তাঁদের অভিযোগ, পার্কিং থেকে তোলা আদায়কে কেন্দ্র করে দুই দুষ্কৃতী দলের গোলমাল চলছে। আর এরই জেরে বারবার অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে মহদিপুর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্র। আমদানি-রফতানির উপরেও এর প্রভাব পড়ছে।

Advertisement

মঙ্গলবার রাতে দু’টি ট্রাকে আগুন লাগানোর পর বুধবার সকালে একটি চাল ও পাথরের গাড়িতে দুষ্কৃতীরা আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। অন্যান্য ট্রাকের চালকরা মঙ্গলবার রাতে আগুন নিভিয়ে ছিলেন। এ দিন সকালে দমকলের একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এক ট্রাকচালক বলেন, “দুষ্কৃতীরা আমাদের মারধর করে টাকা পয়সা ছিনতাই করে নেয়। এখন গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে। রীতিমতো আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে আমাদের।” এক ব্যবসায়ী বলেন, “ট্রাক চালকরা আতঙ্কে মহদিপুরে যেতে চাইছে না। এমন চলতে থাকলে মহদিপুর দিয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে।”

মালদহের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, “দুষ্কৃতীরা তোলা আদায় নিয়ে গোলমাল করে ব্যবসায়ীদের ট্রাকে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করে এলাকায় শান্তি ফেরাতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমরা মহদিপুরে পার্কিং এর দাবি জানিয়েছিলাম। সব শুনে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।” মালদহের পুলিশসুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই এলাকায় নিয়মিত নজরদারি চালানো হচ্ছে।”

Advertisement

মাস চারেক ধরেই পার্কিং থেকে তোলা আদায় নিয়ে মহদিপুর এবং কালিয়াচকের সাহেলাপুরের দু’গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল চলছে। অভিযোগ, বহু পণ্যবাহী ট্রাক মাসের পর মাস রফতানির অপেক্ষায় সীমান্তে দাঁড়িয়ে রয়েছে। অথচ কিছু ট্রাক প্রতিদিন পণ্য আমদানি-রফতানি করছে। অভিযোগ, ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকার বিনিময়ে দুষ্কৃতীরা পণ্যবাহী ট্রাকগুলি ও পারে পাঠায়। এই টাকা নিয়েই ওই দু’গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল চলছে। মাস খানেক আগেও মহদিপুর সীমান্তে একাধিক ট্রাকে আগুন লাগিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। এই নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সীমান্ত বাণিজ্য কেন্দ্র। এমনকী, পুলিশের ভুমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। অভিযোগ, পুলিশের মদতে এবং উদাসীনতাতেই দুষ্কৃতীরাজ চলছে মহদিপুরে। তৎপর হয়েছে পুলিশ। মহদিপুরের পরিস্থিতি সামাল দিতে গড়ে তোলা হয়েছিল বিশেষ বাহিনী। আগ্নেয়াস্ত্র সহ একাধিক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তারপরে কিছুদিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু সম্প্রতি আবার ঘোরালো হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি।

বিধায়ক তথা পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, “দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য বরদাস্ত করা হবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন