দার্জিলিং মেল ধরে সকাল সাড়ে চারটে নাগাদ মালদহ টাউন স্টেশনে পৌঁছাই। আর সেটাই কাল হল। কাগজ পত্র ও কিছু জামা কাপড় থাকায় ব্যাগটা হালকা ছিল। ভোরের আলোয় রিকশা না নিয়ে ঘাড়ে ব্যাগ ঝুলিয়ে হেঁটেই ইংরেজবাজারের রথবাড়ি যাচ্ছিলাম। সেখান থেকেই অটো, কিংবা টোটো ধরে বাড়ি চলে যাব বলে ভেবেছিলাম। মালদহ টাউন স্টেশন থেকে প্রায় ৫০০ মিটার যেতেই কার্নিমোড় সংলগ্ন এলাকায় দুই যুবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি। প্রথমে ভেবেছিলাম পাশ কাটিয়ে চলে যাব। হঠাৎই দুই যুবক পথ আটকায়।
তারা কিছুতেই পথ ছাড়তে রাজি হচ্ছিল না। বলতে থাকে, যা যা কিছু সব দিয়ে দিতে। আমার কাছে শ’পাঁচেক টাকা আর একটি মোবাইল ফোন ছিল। প্রথমে সজোরে একজন আমাকে ঘুঁষি মারে। আরেক জন আমার ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। ব্যাগের কিছু জরুরি কাগজপত্র থাকায় আমি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করি। ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এরমধ্যে একজন ছুরি দিয়ে পেটে আঘাত করে। মাথা ঘুরে গেল, যন্ত্রণায় সজোরে চিৎকার করে উঠলাম। স্টেশন রোড দিয়ে চলাচল করা কিছু রিকশাচালক ও দূর থেকে কযেকজন ছুটে আসতে থাকেন। দু’জনে ততক্ষণে পালিয়ে যায়। সকলে সাহায্যের জন্য ছুটে না গেলে হয়ত ওরা আরও কিছু করত। প্রাণেও বা বাঁচতাম কি না জানি না। সকলে মিলে আমাকে ভর্তি করেন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে।
স্টেশন রোড একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। কিন্তু আমি কখনও পুলিশি টহলদারি দেখতে পাইনি। এ ছাড়া এলাকায় বেআইনি মদের দোকানের সংখ্যা বাড়ছে। বিভিন্ন মাদ্রক দ্রব্য প্রকাশ্যেই সেবন চলছে। ফলে রাতের দিকে একা যেতে ভয়ই হয়। এদিনের পর আতঙ্ক আরও বেড়ে গিয়েছে।
(পুরাতন মালদহের ২ নম্বর ওয়ার্ডের চিতলপুরের বাসিন্দা)